Home স্বাস্থ্য চিনি: শরীরের নীরব বিষ: চিনিমুক্ত জীবনের ৫ সহজ ধাপ

চিনি: শরীরের নীরব বিষ: চিনিমুক্ত জীবনের ৫ সহজ ধাপ

হেলথ ডেস্ক: চিনি (sugar) শরীরের জন্য একপ্রকার বিষ, এমন মন্তব্য বহু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসক আগেই করেছেন। গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার সঙ্গে টাইপ-২ ডায়াবেটিস, ফ্যাটি লিভার, স্থূলতা ও হৃদরোগের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। তাই চিনি কমানো এবং এর বিকল্প খোঁজা এখন বিশেষ জরুরি হয়ে উঠেছে।

সমস্যাটা হলো, চিনি আমাদের মধ্যে একপ্রকার ‘আসক্তি’ তৈরি করে, যার ফলে যাঁরা মিষ্টি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার পছন্দ করেন, তাঁদের পক্ষে চিনি ছেড়ে দেওয়া কঠিন। তবে অসম্ভব নয়।

সম্প্রতি এক ইউটিউব ভিডিওতে NHS-এর চিকিৎসক রূপি আউজলা (MBBS, BSc, MRCGP), যিনি জরুরি বিভাগে কর্মরত একজন জেনারেল ফিজিশিয়ান, জানিয়েছেন কীভাবে তিনি নিজেই ৫টি সহজ ধাপ অনুসরণ করে চিনি খাওয়া ছাড়তে পেরেছেন।

ধাপ ১: পুষ্টিকর, ব্যালেন্সড ব্রেকফাস্ট
সকালের খাবারে সাধারণত থাকে সিরিয়াল, জ্যাম, টোস্ট বা জুস, যার মাধ্যমে অজান্তে প্রচুর চিনি শরীরে চলে আসে। ডাঃ রূপি বলেন, “সকালে চিনি খেলে শরীরে দ্রুত গ্লুকোজ বাড়ে, আবার হঠাৎ কমে যায়। ফলে সারাদিন ক্লান্তি ও খিদে বাড়ে।”
সমাধান হিসেবে তিনি প্রোটিন ও ফাইবার-সমৃদ্ধ ব্রেকফাস্ট পরামর্শ দিয়েছেন, যেমন ডিম, প্রোটিন জাতীয় খাবার অথবা আগের রাতের বেঁচে যাওয়া খাবার।

ধাপ ২: মিষ্টি পানীয় বাদ দিন
সোডা, জুস, প্যাকেটজাত স্মুদি, আইসড কফি—এসবই ‘লুকানো’ চিনির উৎস। এর পরিবর্তে জল, দারচিনি মিশ্রিত হোমমেড আইস টি, হারবাল টি বা ব্ল্যাক কফি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
সতর্কতা: কৃত্রিম মিষ্টি ব্যবহার না করাই ভাল, কারণ এগুলো অন্ত্রের জীবাণু নষ্ট করতে পারে এবং চিনি খাওয়ার আসক্তি পুরোপুরি কমায় না।

ধাপ ৩: মাইন্ডফুল ক্রেভিংস
চিনি খাওয়ার ইচ্ছা হলে নিজেকে প্রশ্ন করুন—“আমার কি আসলেই খিদে পেয়েছে, নাকি আমি শুধু মুখরোচক কিছু চাইছি?” ডাঃ রূপি বলেন, “চিনিকে মনের আনন্দে খান, কিন্তু যা খাচ্ছেন তা মনোযোগ দিয়ে খান—এটি অভ্যাস নয়, উপভোগ্য ট্রিট হোক।”

ধাপ ৪: স্মার্ট শপিং
বাজারে কেনাকাটার সময় লেবেল ভালো করে দেখুন। ১০০ গ্রামে ৫ গ্রামের কম চিনি আছে এমন জিনিস বেছে নিন। কারণ বেশিরভাগ সিদ্ধান্ত আসলে বাজারে নেওয়া হয়, রান্নাঘরে নয়।

ধাপ ৫: যথেষ্ট প্রোটিন খাওয়া
প্রোটিনই চিনির প্রতি আসক্তি কমানোর মূলভিত্তি। পেট ভরানো ও সুষম খাবার না থাকলে মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। কার্বোহাইড্রেট খাওয়ার আগে প্রোটিন রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। টোফু, পনির, মাছ, চিকেন বা ডিম হতে পারে ভালো বিকল্প।

ডাঃ রূপি জোর দিয়ে বলেন, চিনি ছাড়ার কোনো শর্টকাট নেই। এটি পুরোপুরি একটি লাইফস্টাইল পরিবর্তন, যা প্রতিদিনের ছোট অভ্যাসের মাধ্যমে সম্ভব।