Home Second Lead চেম্বার নির্বাচন ঘিরে অপপ্রচার ও চক্রান্তে ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ী-শিল্পপতিরা

চেম্বার নির্বাচন ঘিরে অপপ্রচার ও চক্রান্তে ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ী-শিল্পপতিরা

ছবি এ আই
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (সিসিসিআই) আসন্ন নির্বাচন ঘিরে ব্যবসায়ী মহলে একদিকে যেমন উৎসাহ-উদ্দীপনা, অন্যদিকে তেমনি বেড়েছে উদ্বেগ। বহু বছর পর প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের সুযোগ তৈরি হওয়ায় ব্যবসায়ীরা প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছেন। তবে একইসঙ্গে অভিযোগ উঠেছে যে নির্বাচনে নিশ্চিত পরাজয়ের আশঙ্কায় একটি মহল নানা অপপ্রচার ও চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে। শুধু তাই নয়, যেকোনো ছলে নির্বাচন প্রক্রিয়া বানচাল করার জন্য গোপন তৎপরতাও চালানো হচ্ছে।
অপচেষ্টায় ক্ষুব্ধ ভোটাররা

চেম্বারের ভোটারদের অনেকে মনে করছেন, এসব অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র শুধু নির্বাচনের স্বচ্ছতা নষ্ট করবে না, বরং ব্যবসায়ী সমাজের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন করবে। ইতিমধ্যেই এই তৎপরতার খবর ভোটারদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে ব্যবসায়ী মহলে ক্ষোভ বাড়ছে। ভোটাররা বলছেন, এই নির্বাচন বানচালের আশঙ্কা এখন সর্বত্র আলোচনার বিষয় হলেও তাঁরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হতে দেবেন না। ব্যবসায়ীরা এখন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ—যেকোনো ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করে সুষ্ঠু ও প্রতিযোগিতামূলক ভোট নিশ্চিত করবেন।

ব্যবসায়ীদের অবস্থান

চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্তরের ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন, চেম্বারকে আর কোনো মহলের করায়ত্তে রাখা যাবে না। তাঁদের মতে, নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নেতৃত্ব পরিবর্তন ব্যবসায়ী সমাজের দীর্ঘদিনের দাবি। তাই যে কোনো ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে ব্যবসায়ীরা একজোট হয়েছেন।

একজন পোশাক শিল্প উদ্যোক্তা বলেন, “ব্যবসায়ীরা চেম্বারকে তাদের অর্থনৈতিক স্বার্থের রক্ষাকবচ হিসেবে দেখতে চান। এখানে রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত স্বার্থের জায়গা নেই। নির্বাচনের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা প্রকৃত নেতৃত্ব বেছে নেবেন।”

একজন তরুণ ব্যবসায়ী নেতা জানান, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে চেম্বারে স্থবিরতা দেখেছি। এখন পরিবর্তনের সুযোগ এসেছে। অপপ্রচার ও চক্রান্ত করে এই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বন্ধ করা যাবে না।”

একজন নারী উদ্যোক্তা বলেন, “চেম্বারে নারী ব্যবসায়ীদের জন্য কাজের সুযোগ অনেক কম। আমরা চাই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব আসুক, যারা অন্তর্ভুক্তিমূলক ভূমিকা রাখবে। অপপ্রচার বা চক্রান্ত করে এই পরিবর্তন ঠেকানো যাবে না।”

একজন শিপ ব্রেকিং শিল্প উদ্যোক্তা বলেন, “আমরা জাহাজভাঙা শিল্পের সঙ্গে জড়িত। আমাদের বহু সমস্যা রয়েছে—পরিবেশগত ইস্যু, আন্তর্জাতিক চাপ, ব্যাংকিং জটিলতা। এসব সমাধানে চেম্বারকে শক্তিশালী হতে হবে। তাই সুষ্ঠু নির্বাচন ছাড়া কোনো পথ নেই।”

চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী সমাজ বলছে, চেম্বারের আসন্ন নির্বাচন শুধুমাত্র নেতৃত্ব পরিবর্তনের নয়, বরং এটি হবে ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক সংস্কারের ভিত্তি। তাঁরা আশা করছেন, নতুন নেতৃত্ব বন্দর ও কাস্টমস সংস্কার, বাণিজ্য সহজীকরণ এবং চট্টগ্রামের প্রতি বৈষম্যমূলক নীতি দূরীকরণে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।

ব্যবসায়ী সমাজের সর্বস্তরের অভিমত—অপপ্রচার, ষড়যন্ত্র কিংবা চক্রান্ত কোনো কিছুই ব্যবসায়ীদের ঐক্যকে নড়বড়ে করতে পারবে না। তাঁদের অঙ্গীকার, নির্বাচনের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে, এবং এ নির্বাচনের মাধ্যমে চট্টগ্রামের ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।