বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: চোরের রাজ্যে প্রযুক্তি অনেক দূর এগিয়েছে। শুধু মোবাইল বা ল্যাপটপ চুরি করলেই শেষ নয়, এখন সেই পণ্য অনায়াসেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, সোশ্যাল মিডিয়া বা এমনকি মোবাইল এক্সচেঞ্জ দোকানেও। দরদাম কম, জিনিস ‘হাতে পাওয়া’, আবার অনেকে ক্যাশমেমো পর্যন্ত দেয়। সব মিলিয়ে সাধারণ ক্রেতা বুঝতেই পারেন না তিনি কিনছেন চোরাই পণ্য।
রাজধানীর বিভিন্ন থানার তথ্য বলছে, গত এক বছরে মোবাইল চুরি ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ বেড়েছে আশঙ্কাজনকভাবে। কিন্তু এসব পণ্যের বড় একটা অংশই ধরা পড়ে না। কারণ, এগুলো দ্রুতই বিক্রি হয়ে যায় বিভিন্ন চ্যানেলে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর কিছু মোবাইল রিপেয়ারিং ও এক্সচেঞ্জ দোকানে চোরাই ফোন ও ল্যাপটপ সহজেই মেরামত করে বিক্রির জন্য তোলা হয়। কেউ কেউ শুধু ডিভাইস নয়, বরং অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পুরো দোকান হিসেবেই পরিচালনা করে এই ‘চোরাই বাজার’।
একটি ঘটনার বর্ণনা:
মিরপুরের বাসিন্দা নাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ফেসবুকে একটা আইফোন দেখে কম দামে কিনেছিলাম। সব ঠিকঠাক, ক্যাশমেমোও দিল। কিছুদিন পর হঠাৎ পুলিশ বাসায় এসে জানায়, এই ফোনটি ছিনতাই হওয়া একটি ডিভাইস। পরে থানায় গিয়ে বিপদে পড়তে হয়।’
এই অভিজ্ঞতা শুধু নাহিদুলের নয়। পুলিশ সূত্র বলছে, অনেক সময় নিরীহ ক্রেতারাও অজান্তেই চোরাই পণ্য কিনে আইনি জটিলতায় পড়েন।
বিশেষজ্ঞদের মত:
আইটি বিশেষজ্ঞ ও সাইবার নিরাপত্তা গবেষক রাহাত হোসেন বলেন, ‘মোবাইল বা ল্যাপটপের আইএমইআই নাম্বার বা সিরিয়াল নাম্বার চেক না করেই অনেকে পণ্য কিনে ফেলেন। অথচ এই নম্বরগুলোর মাধ্যমেই পণ্যের সত্যতা যাচাই করা সম্ভব।’
পুলিশের পদক্ষেপ ও পরামর্শ:
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, ‘‘অনলাইনে চোরাই পণ্য বিক্রি রোধে কাজ করছে সাইবার ক্রাইম ইউনিট। তবে সচেতনতা জরুরি। কেউ কম দামে, সন্দেহজনক সূত্রে মোবাইল বা ল্যাপটপ কিনলে পুলিশকে জানানো উচিত।’’
এছাড়া, মোবাইল কেনার আগে আইএমইআই নম্বর *#06# চেপে দেখে তা বিটিআরসি বা মোবাইল কোম্পানির ওয়েবসাইটে যাচাই করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
ক্রেতার করণীয়:
- খুব কম দামে মোবাইল বা ল্যাপটপ কিনতে গিয়ে সাবধান হোন
- পরিচিত দোকান বা অথোরাইজড শোরুম থেকে পণ্য কিনুন
- আইএমইআই বা সিরিয়াল নম্বর যাচাই করুন
- চোরাই পণ্য কিনলে শুধু অর্থ নয়, আইনি জটিলতাও পোহাতে হবে
এমন আরও সচেতনতামূলক প্রতিবেদন পেতে businesstoday24 ফলো করুন ও লাইক দিন।