Home সারাদেশ চুয়াডাঙ্গায় চোলাই মদের বিষে ছয় শ্রমিকের প্রাণহানি

চুয়াডাঙ্গায় চোলাই মদের বিষে ছয় শ্রমিকের প্রাণহানি

ছবি সংগৃহীত
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলার শংকরচন্দ্র ইউনিয়নের ডিঙ্গেদহ এলাকায় বিষাক্ত চোলাই মদ পান করে অন্তত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আরও কয়েকজনকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে ডিঙ্গেদহ বাজার এলাকার গোপন স্থানে ১০–১২ জন ব্যক্তি একসঙ্গে দেশি মদ পান করেন। এর পর থেকেই একে একে অসুস্থ হতে থাকেন অনেকে। শুক্রবার থেকে রোববার রাত পর্যন্ত ছয়জনের মৃত্যু হয়।

নিহতরা সবাই নিম্ন আয়ের পেশাজীবী—কেউ ভ্যানচালক, কেউ মিল শ্রমিক, আবার কেউ মাছ ব্যবসায়ী। মৃতদের পরিচয় পাওয়া গেছে: নফরকান্তি গ্রামের ভ্যানচালক খেদের আলী (৪০), খেজুরা গ্রামের মাছ ব্যবসায়ী সেলিম (৪০), পিরোজখালী গ্রামের ভ্যানচালক লালটু ওরফে রিপু (৩০), শংকরচন্দ্র গ্রামের শ্রমিক শহীদ (৪৫), ডিঙ্গেদহ টাওয়ারপাড়ার মিল শ্রমিক সামির (৫৫) এবং ডিঙ্গেদহ বিস্কুট ফ্যাক্টরি এলাকার শ্রমিক সরদার লালটু (৫২)।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খালেদুর রহমান বলেন, “আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, তারা সবাই একই উৎস থেকে মদ পান করেছিলেন। ইতিমধ্যে ছয়জন মারা গেছেন এবং আরও কয়েকজন অসুস্থ রয়েছেন। একজন এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।”

চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল আল নাসের জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অ্যালকোহলিক পয়জনিংয়ের কারণে এসব মৃত্যু ঘটেছে। তিনি বলেন, “ওই এলাকায় অবৈধভাবে মদ বিক্রি চলছে বলে তথ্য পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশাসনকেও অবহিত করা হয়েছে যাতে দ্রুত অভিযান চালিয়ে এসব অবৈধ দোকান বন্ধ করা যায়।”

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে ডিঙ্গেদহ বাজারে দেশি মদের ব্যবসা চলে আসছে। কিন্তু প্রশাসনের নজরদারির অভাবেই এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী রানা বলেন, “প্রশাসন তৎপর থাকলে এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটত না। মানুষের জীবন এখন এমন বিষে ঝুঁকির মুখে।”

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন দিনমজুর আলিম উদ্দিন। তিনি জানান, তাদের সর্দার ভুট্টার লোডের কাজে যাওয়ার সময় স্পিরিট মেশানো পানীয় দিয়েছিলেন। তিনি অল্প পরিমাণ পান করলেও পরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। বর্তমানে তার অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গেছে।

মৃতদের মধ্যে চারজনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে, বাকিদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এলাকায় এখনো চরম শোক ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।