মন্তব্য প্রতিবেদন
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার সাম্প্রতিক সীমান্ত সংঘাতে শুধু দুই দেশের চিরাচরিত বৈরিতা নয়, নতুন করে আলোচনায় এসেছে যুদ্ধবিমান প্রযুক্তি, বিশেষ করে ফ্রান্সের রাফাল এবং চীনের তৈরি জে-১০সি। যুদ্ধক্ষেত্রে এই দুই বিমানের মুখোমুখি সংঘর্ষ অনেকের কাছে এখন শুধুই সামরিক নয়, বরং ভূরাজনৈতিক শক্তির প্রতিফলন।
গত সপ্তাহে ভারতের অভিযানের পর পাকিস্তানের সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা তিনটি রাফাল, একটি Su-30MKI এবং একটি MiG-29 ভূপাতিত করেছে। যদিও ভারতের তরফে প্রথমে নীরবতা পালন করা হয়, পরে ভারতীয় বিমান বাহিনী স্বীকার করে যে “যুদ্ধক্ষেত্রে ক্ষয়ক্ষতি স্বাভাবিক” তবে বিস্তারিত কিছু জানায়নি। এই বিষয়টিকে অনেকেই আংশিক স্বীকারোক্তি হিসেবে দেখছেন।
বিশেষ করে, দুইজন মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে প্রকাশিত এক তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানের চীনা নির্মিত জে-১০সি যুদ্ধবিমান অন্তত দুইটি রাফাল ধ্বংস করেছে এটি ভারতের পক্ষে কৌশলগত দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও চিন্তার বিষয়।
রাফাল বিমান ৪.৫ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান হলেও এর এভিওনিক্স, ডুয়েল ইঞ্জিন ও উন্নত সিস্টেমের কারণে এটি আন্তর্জাতিকভাবে ‘পাওয়ার প্রজেকশন প্লাটফর্ম’ হিসেবে বিবেচিত। ভারত, কাতার, মিশরসহ একাধিক দেশ রাফাল বেছে নিয়েছে। ভারত তো নতুন করে আরও ২৬টি রাফাল কেনার চুক্তিও করেছে।
অন্যদিকে, চীনের জেএসইউ-১০সি (J-10C) বিমান, যদিও এক ইঞ্জিনবিশিষ্ট, কিন্তু এটি উন্নত রাডার সিস্টেম, AESA প্রযুক্তি ও চীনা PL-15 ক্ষেপণাস্ত্র বহনে সক্ষম—যা রাফালের MICA কিংবা Meteor মিসাইলের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে বলে দাবি করছে বিশ্লেষকেরা।
এই আকাশযুদ্ধে কার বিমান কতটি ধ্বংস করেছে তা যতটা না সামরিক পরিসংখ্যান, তার চেয়েও বড় বিষয় হচ্ছে, কোন দেশ এখন যুদ্ধ প্রযুক্তিতে কতটা আত্মনির্ভর ও প্রতিযোগী। পাকিস্তান যদি সত্যিই রাফালের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তোলে, তবে তা শুধু ভারত নয়, বরং রাফাল ব্যবহারকারী দেশগুলোকেও চিন্তায় ফেলবে।
ভারতের জন্য বার্তাটা পরিষ্কার শুধু প্রযুক্তি নয়, আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্য কৌশলগত একত্রীকরণ ও উন্নত প্রশিক্ষণও সমান গুরুত্বপূর্ণ।
ভারত-পাকিস্তান সংঘাত আবারও প্রমাণ করলো, আধুনিক যুদ্ধক্ষেত্রে আকাশ আধিপত্য নির্ধারণে প্রযুক্তির পাশাপাশি জোটরাজনীতি, প্রস্তুতি ও কৌশলগত অবস্থান কতটা প্রভাব ফেলে। ফ্রান্স ও চীনের এই পরোক্ষ লড়াই দক্ষিণ এশিয়ার আকাশে নতুন উত্তেজনা তৈরি করছে।
যুদ্ধে কে জিতলোতা সময় বলবে। তবে প্রতিটি ধ্বংস হওয়া রাফাল বা প্রতিহত হওয়া জে-১০ শুধু একটি বিমান নয়, বরং একটি বার্তাকে প্রস্তুত, কে প্রতিক্রিয়াশীল।