বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের আগে মুহসীন হলের একটি রুমে ঘটে গেছে চাঞ্চল্যকর ঘটনা। ভিপি প্রার্থী ও টেলিভিশন অ্যান্ড ফিল্ম ডিপার্টমেন্টের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী জালাল আহমদ ওরফে জ্বালাময়ী জালালকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রুম থেকে বের করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। আবাসিক হলে রুমমেটকে ছুরিকাঘাত করার অভিযোগে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) রাত সাড়ে ১২টার দিকে হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের ৪৬২ নম্বর কক্ষে ঘটেছে এই ঘটনা। আহত শিক্ষার্থী রবিউল হক, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী, বর্তমানে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে চলমান বাকবিতণ্ডা এবং হলের অবস্থান সংক্রান্ত টানাপোড়েনের জেরে রুমমেট জালাল আহমেদ রবিউলকে ছুুরি দিয়ে আঘাত করেন। আহত শিক্ষার্থী হাসপাতালের বিছানায় বসে জানান, রাত সাড়ে ১২টার দিকে রুমে হঠাৎ লাইট অন করে জালাল শব্দ করতে শুরু করলে তার ঘুম ভেঙে যায়। তিনি বুঝিয়ে বলতে গেলে, জালাল রেগে যায় এবং অবৈধ ও বহিরাগত হিসেবে অভিযুক্ত করে। প্রতিবাদ করার সঙ্গে সঙ্গেই আঘাত ঘটে। রবিউল তার আত্মরক্ষার কথাও উল্লেখ করেছেন।
অন্যদিকে জালাল আহমেদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের আহত হওয়া ক্ষতচিহ্নের ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল থেকে অবৈধ ও বহিরাগত শিক্ষার্থীদের বের করে দেওয়ার দাবিতে উকিল নোটিশ পাঠানোর প্রাক্কালে হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে রুমে আমার রুমমেট রবিউল ইসলাম আমাকে আঘাত করেছে। সে কয়েক মাস ধরে অবৈধভাবে হলে অবস্থান করছে।”
ঘটনার পরপরই অন্যান্য শিক্ষার্থীরা জালালের রুমের সামনে ভিড় করে তাকে বের হতে চাপ দেয়। তবে তিনি রুমের ভেতরে নিজেকে আটকে রাখেন। পরে প্রক্টর ও হল প্রভোস্টের সহায়তায় তাকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়।
হল প্রভোস্ট এবং হল প্রাধ্যক্ষ ড. মো. সিরাজুল ইসলাম এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত জালাল আহমদকে তাৎক্ষণিকভাবে হল থেকে বহিষ্কার করার ঘোষণা দেন। পাশাপাশি পুলিশকে অবহিত করে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
ঘটনাটি ঢাবির ছাত্র রাজনীতিতে নির্বাচনের আগে উত্তেজনা এবং হলভিত্তিক দ্বন্দ্বের কথাই সামনে এনেছে। ছাত্রসমাজ ও প্রশাসনের নজর এখন এই ঘটনার পরে সম্ভাব্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও শিক্ষার্থীদের মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ন্ত্রণে।