ধারাবাহিক রোমান্টিক গল্প
চোখের ভঙ্গি আর অচেনা স্পর্শ
স্মৃতি হাসান
পর্ব ১-এর সেই প্রথম চোখের মিল এখনও রিহানার মনে উজ্জ্বলভাবে জ্বলছে। কলেজের ক্লাসে বসেও তার মন বারবার ফিরে আসে ক্যাফেটেরিয়ার ছোট টেবিলে, যেখানে রিয়াজ প্রথমবার তার দিকে হাসল। হঠাৎ মনে হয়, যেন সেই এক মুহূর্তই সময়কে থামিয়ে দিয়েছে।
ক্লাস শেষে রিহানা ধীরে ধীরে ক্যাম্পাসের লন পার হয়ে বের হল। বাতাসে আজও সেই অদ্ভুত উত্তেজনা মিশে আছে। পেছন থেকে হঠাৎ কারো কণ্ঠে ডাক শুনে সে ঘুরে দেখল, রিয়াজ।
“তুমি কি এই রাস্তায় প্রায়ই আসো?”—তার কণ্ঠে হালকা উৎসুকতা এবং চুপচাপ আতঙ্ক, দুটোই মিশে আছে।
রিহানা হেসে উত্তর দিল, “না, আজ শুধু একদম ঠিক সময়ে আসা হয়েছে।”
দুজন ধীরে ধীরে হাঁটতে শুরু করল। রাস্তার পাশে ফুলের বাগান, আর বাগানের গন্ধে ভরা বাতাস যেন তাদের কথোপকথনকে আরও কোমল করে তুলেছে। রিহানা লক্ষ্য করল, রিয়াজ কথার মাঝেই তার চোখে এক অদ্ভুত সততা এবং কৌতূহল প্রকাশ করছে।
“তুমি কি জানো,” রিয়াজ হঠাৎ বলল, “প্রথমবার যখন তোমার চোখে তাকালাম, মনে হলো… কিছু বলার নেই, শুধু দেখতেই হবে।”
রিহানা লাজুকভাবে চুপ করে রাস্তায় তাকাল। হঠাৎ মনে হলো, এই অচেনা যুবকের কথায় তার হৃদয় অচেনা রকমভাবে নড়ছে।
দুজনের হাঁটাহাঁটির ছন্দ, বাতাসের সুর, আর দূরে পড়ন্ত রোদ—সব মিলিয়ে যেন গল্পের নতুন সুর বাজাচ্ছে। হঠাৎ রিয়াজ থামল। “আমি চাই, আজকের দিনটা আমাদের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকুক।”
রিহানা হেসে তাকাল, “কীভাবে?”
রিয়াজ চোখে কৌতূহল এবং অল্প লাজুকতা নিয়ে বলল, “এক কাপ কফি, পাশে বসে, আর কথা বলব, শুধু আমরা দুজন।”
ক্যাম্পাসের ছোট কফি শপে তারা বসল। কফির গরম কাপ হাতে, তাদের চোখ মেলামেশা, হেসে ওঠা, ছোট ছোট চুপচাপ মুহূর্ত,সব মিলিয়ে এক ধরনের অদ্ভুত আন্তরিকতা তৈরি করল। রিহানা বুঝল, আজকের দিন শুধু পরিচয় নয়, এটি তাদের গল্পের এক নতুন অধ্যায়।
কথায় কথায় রিয়াজ হঠাৎ বলল, “আমি জানি, আজকে আমাদের দেখা শুধু শুরু। তবে মনে হচ্ছে, আমাদের গল্পের প্রতিটি অধ্যায় হবে চোখের ভঙ্গি, হাসির চমক, আর অচেনা স্পর্শে ভরা।”
রিহানা হেসে মাথা নেড়ে সম্মতি দিল। তার হৃদয় এখন স্পষ্ট, এখনো সবকিছু নতুন, কিন্তু এই নতুনত্বের মধ্যে আনন্দ এবং উত্তেজনা রয়েছে।
কফি শপের জানালা দিয়ে সূর্যের আলো ঢুকছে, আর আলোয় ভেজা রাস্তায় ঝলমল করছে প্রতিটি মুহূর্ত। রিহানা জানে, পরবর্তী দেখার জন্য অপেক্ষা তাকে আরও বেশি উত্তেজিত করবে। আর রিয়াজও বুঝেছে, এই চোখের ভঙ্গি আর অচেনা স্পর্শই তাদের গল্পকে নতুনভাবে বাঁচিয়ে তুলবে।
পর্বটি শেষ হলেও, রিহানা ও রিয়াজের চোখের এই সংযোগ এবং অদ্ভুত উত্তেজনা পাঠককে পরবর্তী অধ্যায়ের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে বাধ্য করবে।










