কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ছায়ায় ঝুঁকির মুখে পেশা
বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: কখনো বিকেলবেলা হঠাৎ ফোন বেজে ওঠে, ওপাশে কেউ বলতে থাকে “স্যার, আপনি কি আমাদের নতুন অফার সম্পর্কে শুনেছেন?” এ ধরনের টেলিমার্কেটিং ফোন কল অনেকেরই চেনা। কিন্তু এই পরিচিত কণ্ঠগুলো দ্রুতই হারিয়ে যেতে বসেছে। কারণ, এখন এই কাজগুলো করে নিচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চালিত ভয়েসবট বা স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম।
বিভিন্ন কোম্পানি এখন তাদের টেলিমার্কেটিং কার্যক্রমে মানুষ নয়, বরং এআই ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট ব্যবহার করছে। যারা নিখুঁতভাবে স্ক্রিপ্ট পড়ে, প্রশ্নের উত্তর দেয়, এবং কখনো কখনো মানুষের কণ্ঠে এমন স্বাভাবিক শোনায় যে, গ্রাহক বুঝতেই পারেন না এটা একটি রোবট। ফলে, একটি বড় অংশে টেলিমার্কেটারদের প্রয়োজনীয়তা দ্রুত কমে আসছে।
যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, ফিলিপাইনসহ অনেক দেশেই কল সেন্টার বা টেলিসেলস পেশা ছিল লাখো মানুষের কর্মসংস্থানের মাধ্যম। বিশেষ করে তরুণদের জন্য এটি ছিল প্রথম চাকরির একটি বড় ক্ষেত্র। কিন্তু এখন সেই কাজের বড় একটা অংশই হয়ে যাচ্ছে এআই অটোমেশন ও ভয়েসবটের মাধ্যমে। এক জরিপ বলছে, ২০২৭ সালের মধ্যে টেলিমার্কেটিং পেশার প্রায় ৪০ শতাংশই বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে।
এই পেশায় নিয়োজিতদের জন্য করণীয় কী?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেবল স্ক্রিপ্ট মুখস্থ করে বলা বা পণ্যের সাধারণ বর্ণনা দেওয়ায় আর ভবিষ্যত নেই। এখন যেসব টেলিমার্কেটার প্রযুক্তি বোঝেন, ডেটা বিশ্লেষণ করতে পারেন, গ্রাহকের আচরণ বুঝে স্মার্ট উপায়ে যোগাযোগ করেন—তাদের টিকে থাকার সুযোগ বেশি। এ ছাড়া, ডিজিটাল মার্কেটিং, কনটেন্ট স্ট্র্যাটেজি বা গ্রাহক অভিজ্ঞতা ব্যবস্থাপনা বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করেও একই খাতে নতুনভাবে কাজের সুযোগ তৈরি করা যেতে পারে।
চাপ বাড়ছে শিক্ষাব্যবস্থার ওপরও
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মেলাতে হলে শুধু কর্মীদের নয়, ভোকেশনাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোকেও পাঠ্যক্রমে পরিবর্তন আনতে হবে। শুধুমাত্র কল করার দক্ষতা নয়—গ্রাহক মনোবিজ্ঞান, এআই সফটওয়্যার পরিচালনা এবং সমস্যা সমাধানমূলক দক্ষতা শেখানো দরকার।