বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য, বিশিষ্ট স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ এবং লোকপ্রশাসন বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমেদ আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বুধবার (৮ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।
জানাযা আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় হাটহাজারীর মাদনহাট হাই স্কুল মাঠে (ফতেহপুর) অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন চবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন। পরে পারিবারিক কবরস্থানে তোফায়েল আহমেদকে দাফন করা হবে বলে জানান তাঁর জামাতা।
তোফায়েল আহমেদের জামাতা লেফটেন্যান্ট কর্নেল সরোয়ার জাহান গণমাধ্যমকে জানান, তাঁর হৃদযন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়েছিল এবং ফুসফুসে সংক্রমণও দেখা দিয়েছিল। বুধবার বিকেলে হৃদযন্ত্রে রিং পরানোর জন্য তাঁকে অস্ত্রোপচার কক্ষে নেওয়া হয়। কিন্তু প্রস্তুতির সময় হঠাৎ শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাতেই মরহুমের মরদেহ চট্টগ্রামের হাটহাজারীর নিজ গ্রাম ফতেহপুরে নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সেখানে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর দাফন সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমেদ দেশের স্থানীয় সরকার কাঠামো, প্রশাসনিক সংস্কার ও বিকেন্দ্রীকরণে অন্যতম প্রধান গবেষক ও চিন্তাবিদ হিসেবে খ্যাত ছিলেন। ২০২৪ সালের অক্টোবরে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সময় গঠিত নির্বাচনি সংস্কার কমিশনের সদস্য হিসেবে তাঁকে মনোনীত করা হয়। পরবর্তীতে তিনি স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
ড. তোফায়েল আহমেদের গবেষণা, লেখনী ও নীতি-প্রস্তাব দীর্ঘদিন ধরে নীতিনির্ধারক, গবেষক ও শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা যুগিয়ে আসছে।
১৯৫৫ সালের ৪ মে চট্টগ্রামের ফতেহপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ফতেহাবাদ উচ্চ বিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম কলেজ থেকে যথাক্রমে এসএসসি ও এইচএসসি সম্পন্ন করে ১৯৭৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনীতি ও প্রশাসনে স্নাতক এবং ১৯৭৭ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে ১৯৮১ সালে ব্রিটেনের সোয়ানসি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সামাজিক খাত পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনায় দ্বিতীয় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি এবং ১৯৯১ সালে উন্নয়ন অধ্যয়নে পিএইচডি অর্জন করেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগে দীর্ঘ পেশাজীবনে তিনি ছিলেন শিক্ষক, গবেষক ও এক প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণার উৎস।
তাঁর মৃত্যুতে শিক্ষা ও প্রশাসনিক মহলে গভীর শোক নেমে এসেছে।










