দেশের তরুণ প্রজন্মের ভোটাধিকার প্রয়োগ কেবল শিক্ষার্থী নেতৃত্ব নির্ধারণ করবে না, বরং ভবিষ্যতের রাজনৈতিক প্রবণতার দিক নির্দেশ করবে।
আমিরুল মোমেনিন, ঢাকা: আজ মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) এবং হল সংসদ নির্বাচনের দিন। দীর্ঘ সময় পরে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচন শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন নেতৃত্বের স্বীকৃতি, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রভাব এবং ক্যাম্পাস রাজনীতির নতুন চিত্র প্রকাশের মঞ্চ হিসেবে দেখা হচ্ছে। দেশের রাজনৈতিক দলগুলোও নজর রাখছেন, কারণ ফলাফল ভবিষ্যতের শিক্ষার্থী নেতৃত্ব এবং রাজনৈতিক ভারসাম্য সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত দেবে।
সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে। দীর্ঘ সময় পরে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচন কেবল শিক্ষার্থী নেতৃত্ব নির্ধারণের মঞ্চ নয়; বরং দেশের তরুণ প্রজন্মের রাজনৈতিক মনোভাব ও ক্যাম্পাস রাজনীতির নতুন চিত্র প্রকাশের সুযোগ।
শিক্ষার্থী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঐতিহ্যগতভাবে দেশের রাজনৈতিক আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিত। দীর্ঘ সময় পর অনুষ্ঠিত এই নির্বাচন শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন নেতৃত্বের স্বীকৃতি এবং রাজনৈতিক প্রবণতা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। শিক্ষার্থীরা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে নিজেরা কী ধরনের নেতৃত্বকে সমর্থন করছেন, তা স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হবে।
দেশের রাজনৈতিক দল ও জনগণের নজর
এবারের ডাকসু নির্বাচনে কেবল ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরাই নয়, দেশের সাধারণ মানুষও নজর রাখছেন। নির্বাচন ফলাফল প্রায়শই জাতীয় রাজনীতির তরঙ্গের আভাস দেয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল শিক্ষার্থীদের ভোট ও প্রার্থীদের প্রভাব পর্যবেক্ষণ করছেন, কারণ বিজয়ী প্রার্থীদের কর্মশৈলী ভবিষ্যতে রাজনৈতিক নেতৃত্বের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিশেষ করে সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী প্রার্থীরা আগামী বছরগুলোতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এবং সাংগঠনিক কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য প্রভাব রাখতে পারবেন।
ভোটার মনোভাব ও অংশগ্রহণ
৩৯,৮৭৪ জন ভোটারকে কেন্দ্র করে ভোটগ্রহণ চলছে। ভোটাররা একদিকে নিজস্ব সংগঠন বা স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রতি সমর্থন জানাবেন, অন্যদিকে ক্যাম্পাসের সামগ্রিক রাজনৈতিক শক্তির ভারসাম্যও প্রভাবিত হবে। শিক্ষার্থীদের ভোটের ধরন ও অংশগ্রহণ দেশের যুব সমাজের রাজনৈতিক মনোভাব ও প্রবণতার একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক।
নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন
নির্বাচনের দিন ক্যাম্পাসে নিরাপত্তার জন্য ২০৯৬ জন পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া সোয়াত, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট এবং সাদা পোশাকে ডিবি সদস্যরা টহলে রয়েছেন। প্রশাসন ভোটের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখার পাশাপাশি ভোটারদের নিরাপদভাবে কেন্দ্রে পৌঁছানোর ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে।
ভবিষ্যতের রাজনৈতিক প্রভাব
ডাকসু নির্বাচনের ফলাফল কেবল কেন্দ্রীয় ও হল সংসদের নেতৃত্ব নির্ধারণ করবে না; এটি ভবিষ্যতের শিক্ষার্থী রাজনীতি ও নেতৃত্বের মানদণ্ড স্থির করবে। যারা জিতবেন, তারা শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাজনৈতিক সক্রিয়তা বৃদ্ধির পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদে ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক ভারসাম্য প্রভাবিত করতে সক্ষম হবেন। দেশের রাজনৈতিক দলগুলোও এই ফলাফল থেকে তরুণ প্রজন্মের রাজনৈতিক প্রবণতা ও নেতাদের চিত্র সম্পর্কে ধারণা পাবেন।
সংক্ষেপে, ডাকসু নির্বাচন ২০২৫ শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মঞ্চ নয়, এটি দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের একটি সূচক। শিক্ষার্থী রাজনীতির নতুন চিত্র, স্বতন্ত্র নেতৃত্বের সম্ভাবনা এবং শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক অংশগ্রহণের মানদণ্ড দেশের রাজনীতিকেও প্রভাবিত করবে।