Home স্বাস্থ্য সাত দিনে ডায়াবেটিস মুক্তির নামে অনলাইন ‘প্রতারণা’

সাত দিনে ডায়াবেটিস মুক্তির নামে অনলাইন ‘প্রতারণা’

হেলথ ডেস্ক: “সাত দিনে ডায়াবেটিস নির্মূল”—ফেসবুক ও ইউটিউব খুললেই এমন চটকদার বিজ্ঞাপনে সয়লাব অনলাইন প্ল্যাটফর্ম। চিকিৎসা বিজ্ঞানের স্বীকৃত রীতিনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এক শ্রেণির অসাধু চক্র সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়াবেটিস কোনো নিরাময়যোগ্য রোগ নয়, বরং এটি একটি আজীবন নিয়ন্ত্রণযোগ্য শারীরিক অবস্থা। অথচ দ্রুত সুস্থতার লোভে পড়ে অপচিকিৎসার শিকার হয়ে জীবনঝুঁকিতে পড়ছেন হাজারো মানুষ।

দেশের প্রথিতযশা নিউরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. বদরুল আলম   এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ডায়াবেটিস একটি বহুমাত্রিক রোগ। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ওষুধ সেবন এবং রক্তে শর্করার মাত্রা সঠিক মাত্রায় রাখাই সুস্থ থাকার একমাত্র পথ।

তিনি সতর্ক করে বলেন, “রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়া—উভয়ই রোগীর জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। সঠিক ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করলে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত একজন রোগী সম্পূর্ণ স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারেন।”

একই সুরে কথা বলেছেন জাতীয় অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি ডা. এ কে আজাদ খান। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “সাত দিনে ডায়াবেটিস সারিয়ে ফেলার মতো কোনো চিকিৎসা বিশ্বে এখনো আবিষ্কার হয়নি। এগুলো প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই নয়। ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, কিন্তু নির্মূল করা যায় না।”

অনলাইনে ডায়াবেটিস ও ক্যানসারের মতো জটিল রোগের তথাকথিত ‘গ্যারান্টিযুক্ত’ চিকিৎসা প্রদান করা বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) আইনের দৃষ্টিতে দণ্ডনীয় অপরাধ। বিএমডিসি-র রেজিস্ট্রার ডা. মো. লিয়াকত হোসেন জানান, ইতিপূর্বে ডা. জাহাঙ্গীরসহ বেশ কয়েকজনকে এমন অপপ্রচারের জন্য সতর্ক করা হয়েছে।

জানা গেছে, অভিযুক্তদের মধ্যে ডা. জাহাঙ্গীর এমবিবিএস পাস করা চিকিৎসক হলেও তিনি চিকিৎসা বিজ্ঞানের স্বীকৃত পদ্ধতির বাইরে গিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালাচ্ছেন। বিএমডিসি জানিয়েছে, তাদের আবারও নোটিশ পাঠানো হয়েছে এবং এসব অপতৎপরতা বন্ধে দ্রুত কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শিক্ষিত-অশিক্ষিত নির্বিশেষে সব শ্রেণির মানুষ এই অনলাইন ফাঁদে পা দিচ্ছেন। চটকদার বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে ভেজাল ও নকল ওষুধ সেবন করায় কিডনি বিকল হওয়া থেকে শুরু করে অকাল মৃত্যুর আশঙ্কা বাড়ছে।

চিকিৎসকদের পরামর্শ—অনলাইনে কোনো জাদুকরী দাওয়াইয়ের পেছনে না ছুটে নিবন্ধিত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অধীনে চিকিৎসা গ্রহণ করাই নিরাপদ।