Home আন্তর্জাতিক আট যুদ্ধ থামানোর দাবি ট্রাম্পের, এবার পাক-আফগান সংঘাত নিয়েও আশ্বাস

আট যুদ্ধ থামানোর দাবি ট্রাম্পের, এবার পাক-আফগান সংঘাত নিয়েও আশ্বাস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ থামানোর কৃতিত্ব দাবি করে আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সিরিয়া, ইউক্রেন, কোরিয়া উপদ্বীপসহ নানা স্থানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় নিজের ভূমিকা নিয়ে বহুবার মন্তব্য করেছেন তিনি। সম্প্রতি গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি প্রচেষ্টার সাফল্য নিয়েও কৃতিত্ব দাবি করেছেন ট্রাম্প। তবে এখানেই থামছেন না তিনি। এবার তাঁর লক্ষ্য পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্তে চলমান রক্তক্ষয়ী সংঘাত থামানো।

রবিবার (আমেরিকার স্থানীয় সময়) ইজরায়েলের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “এটা আমার অষ্টম যুদ্ধ, যা আমি থামালাম (গাজায় ইজরায়েল ও হামাসের সংঘাত)। আমি শুনেছি পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। ইজরায়েল থেকে ফিরে এসে সেটাও থামাব। যুদ্ধ থামানো কাজটা আমি বেশ পারি।”

ইজরায়েলের আইনসভা ‘নেসেট’-এ বক্তৃতা দেওয়ার পর মিশরে অনুষ্ঠিত শান্তি সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। এই সফরকেই ট্রাম্পের শান্তি প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকেরা।

পাকিস্তান-আফগানিস্তান সংঘাতের পটভূমি

গত বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে একাধিক বিমান হামলার ঘটনা ঘটে, যার দায় চাপানো হয় পাকিস্তানের ওপর। জবাবে শনিবার তালেবান বাহিনী পাকিস্তান সীমান্তে পাল্টা হামলা চালায় বলে দাবি করেছে কাবুল। আফগান পক্ষের দাবি, এই হামলায় অন্তত ৫৮ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত এবং বেশ কয়েকটি সামরিক ঘাঁটি দখল করা হয়েছে।
পাক সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, রাতভর সংঘর্ষে তাদের ২৩ জন সেনা নিহত এবং ২৯ জন আহত হয়েছেন। তারা দাবি করেছে, পাল্টা হামলায় ২০০-র বেশি তালেবান যোদ্ধা ও সহযোগী নিহত হয়েছে। সংঘাত আরও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে ট্রাম্পের নতুন শান্তি-উদ্যোগকে আন্তর্জাতিক মহলে তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে অনেক কূটনৈতিক বিশ্লেষক মনে করছেন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের দ্বন্দ্বের মূল কারণ সীমান্ত ও সন্ত্রাসবাদের আশ্রয়, যা ‘একদিনে সমাধানযোগ্য নয়’।

পুরনো দাবি ও নোবেল প্রসঙ্গ

এর আগেও ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, ২০১৯ সালে পহেলগাঁও হামলার পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সংঘাত থামাতে তিনিই মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন। এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তান ২০২০ সালে তাঁর নাম নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য প্রস্তাব করেছিল।
তবে ভারত সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছিল, দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে তৃতীয় কোনও পক্ষের মধ্যস্থতার সুযোগ নেই।

রবিবার ট্রাম্প বলেন,“আমার লক্ষ্য পুরস্কার পাওয়া নয়, মানুষের জীবন বাঁচানো।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই শান্তি–প্রচেষ্টা ও আত্মপ্রশংসামূলক বক্তব্য তাঁর আসন্ন নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবেও দেখা যেতে পারে।