শিপিং ডেস্ক: ইয়েমেনের রাস ইসা বন্দরে ঘানা পতাকাবাহী একটি তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) ট্যাংকারে ইসরায়েলি ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটেছে। ক্লিপার গ্যাস ক্যারিয়ার নামের জাহাজটিতে মোট ২৭ জন নাবিক ছিলেন, তাদের মধ্যে ২৪ জন পাকিস্তানি, দুজন শ্রীলঙ্কান ও একজন নেপালি। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি শনিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
বন্দরে নোঙর থাকা অবস্থায় ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে তিন দফা ড্রোন হামলায় ট্যাংকারটি ভয়াবহ আগুনে ঘিরে যায়। শেষ দফার আঘাতের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে নাবিকরা জীবনরক্ষাকারী ভেলায় ভেসে জাহাজ ছেড়ে যেতে বাধ্য হন। তবে ইয়েমেনি কর্তৃপক্ষ পরে তাদের উদ্ধার করে আবার জাহাজে ফিরিয়ে নিয়ে যায় এবং নির্দেশ দেয় জাহাজটিকে বন্দরের বাইরে সরিয়ে নিতে। ক্রুরা এতে আপত্তি জানালেও সাত মাইল দূরে জাহাজকে নোঙর করা হয়।
হামলার পর জাহাজের একটি এলপিজি ট্যাংক বিস্ফোরিত হয়, তবে নাবিকরা প্রাণপণ চেষ্টা করে ২০ সেপ্টেম্বর আগুন নেভাতে সক্ষম হন। এসময় জাহাজ থেকে গ্যাস লিকেজ, অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জামের অভাব এবং খাবার-ঘুমের সংকট নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মরিয়া বার্তাও পাঠিয়েছিলেন এক পাকিস্তানি নাবিক। তিনি অভিযোগ করেন, কর্তৃপক্ষ নাবিকদের জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলে শুধু কার্গো রক্ষাতেই বেশি মনোযোগ দিয়েছে।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নাকভি জানান, “হামলার পর হুথি বিদ্রোহীরা জাহাজ ও নাবিকদের জিম্মি করে রেখেছিল। পরে নিরাপত্তা সংস্থা, ওমান ও সৌদি আরবে নিযুক্ত কর্মকর্তাদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় আমাদের নাগরিকরা মুক্তি পেয়েছেন এবং নিরাপদে ইয়েমেনের জলসীমা ছেড়েছেন।” তিনি সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানান।
এর আগে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও নিশ্চিত করেছে যে, জাহাজে থাকা সব পাকিস্তানি নাগরিক বর্তমানে সুস্থ ও নিরাপদ আছেন। জাহাজটি ইয়েমেনের জলসীমা ত্যাগ করেছে এবং দূতাবাসগুলো শুরু থেকেই ইয়েমেনি কর্তৃপক্ষ ও নাবিকদের পরিবারকে নিয়মিত তথ্য দিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, গাজার যুদ্ধ ঘিরে ইসরায়েল-হুথি সংঘাতের অংশ হিসেবেই এ হামলা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যপথে বাড়তে থাকা এ ধরনের হামলা বৈশ্বিক জাহাজ চলাচলের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন উদ্বেগ তৈরি করেছে।