Home First Lead শাহজালালে উড্ডয়নের পরপরই তার্কিশ ফ্লাইটে আগুন, বার্ড হিট সন্দেহ

শাহজালালে উড্ডয়নের পরপরই তার্কিশ ফ্লাইটে আগুন, বার্ড হিট সন্দেহ

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের পরপরই তার্কিশ এয়ারলাইন্সের টিকে-৭১৩ ফ্লাইটের একটি ইঞ্জিনে আগুন ধরে যায়। আজ মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে ২৯০ জন যাত্রী নিয়ে তুরস্কের ইস্তাম্বুলের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিল এয়ারবাস এ ৩৩০-৩৩০ মডেলের উড়োজাহাজটি।

উড্ডয়নের প্রায় ১৫ মিনিট পর পাইলট এক ইঞ্জিনে আগুনের সঙ্কেত দেখতে পান। তৎক্ষণাৎ সতর্কতা অবলম্বন করে তিনি বিমানটি প্রায় দেড় ঘণ্টা আকাশে চক্কর দিয়ে জ্বালানি পুড়িয়ে হালকা করেন এবং সকাল সোয়া ৮টার দিকে জরুরি অবতরণে সক্ষম হন। এসময় বিমানবন্দরে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়।

বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এসএম রাগীব সামাদ জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বার্ড হিটের কারণে এই ঘটনা ঘটতে পারে। তিনি বলেন, “বিষয়টি তদন্তাধীন। সৌভাগ্যক্রমে কোনো যাত্রী আহত হননি। সবাই নিরাপদে আছেন।”

এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের হোটেলে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছে এবং বিকল্প ফ্লাইটের প্রস্তুতিও নিচ্ছে বলে জানা গেছে।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বার্ড হিটের ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও একাধিকবার একই ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে বিমান চলাচল।

২০২৩ সালের আগস্টে একদিনেই দুটি পৃথক ঘটনায় বার্ড হিটের কারণে একটি ঢাকা-ব্যাংকক ফ্লাইটের টায়ার ফেটে যায় এবং ফ্লাই দুবাইয়ের আরেকটি ফ্লাইটের ইঞ্জিনের তিনটি প্রপেলার ব্লেড ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উভয় ফ্লাইটের যাত্রীদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে বিমানের একটি ড্রিমলাইনার লন্ডন থেকে ঢাকায় অবতরণের সময় ইঞ্জিনে বার্ড হিটের শিকার হয়। পাইলট দক্ষতার সঙ্গে সেটি নামিয়ে আনেন। আর ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ম্যানচেস্টার বিমানবন্দরে অবতরণের সময় একই ধরনের ঘটনায় আরেকটি ড্রিমলাইনারের ইঞ্জিন ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেটি ছয় দিন পর ঢাকায় ফিরে আসে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শাহজালালের আশেপাশে জলাশয়, খাদ্যবর্জ্য ও সবুজ ঘাস পাখিদের আকৃষ্ট করে, বিশেষ করে শীতকালীন সময়ে। এতে বার্ড হিটের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ  বিষয়টি মোকাবেলায় বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে এয়ারলাইনগুলোর অভিযোগ।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ  জানিয়েছে, তারা বার্ড হিট প্রতিরোধে সাউন্ড রিপেলার, লেজার ডিভাইস ও শুটার মোতায়েন করেছে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে রাডারভিত্তিক বার্ড মনিটরিং সিস্টেম স্থাপনের পরিকল্পনাও রয়েছে।

এ ঘটনার পর নিরাপত্তা ও নজরদারির দিকটি নতুনভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে বলে মনে করছেন বিমান সংশ্লিষ্টরা।