(একটি বাংলার লোকজ রূপকথা )
অনেক দিন আগের কথা। তিনটি রাজ্য ছিল পাশাপাশি। মালিনী, কাঞ্চনপুর ও চন্দ্রমণি। প্রতিটি রাজ্যে ছিল এক এক জন রাজা, এবং প্রত্যেকের ছিল একমাত্র কন্যা। তারা তিন জনই ছিল অদ্ভুত সুন্দরী ও বুদ্ধিমতী, রূপবতী, সুবর্ণা ও জ্যোৎস্না।
তিন রাজকন্যার মধ্যে বন্ধুত্ব ছিল হৃদয়ের মতোই গভীর। এক রাতে তারা তিন জনেই একই সময়ে, এক স্বপ্ন দেখে।স্বপ্নে তারা দেখে এক যুবক এসে তাদের আঙুল ধরে বলছে, “আমি তোমার নিয়তি, আমায় খুঁজে নাও, নয়তো হারিয়ে যাবো অন্ধকারে।”
স্বপ্ন দেখে তারা ঘুম ভাঙতেই হতবাক। গল্প শুনিয়ে তারা বুঝতে পারে, তিনজনেই দেখেছে তিন ভিন্ন যুবককে, কিন্তু স্বপ্নের বার্তাটি প্রায় এক!
🏰 অভিযাত্রার সিদ্ধান্ত
রাজারাজড়ার আপত্তি সত্ত্বেও তিন রাজকন্যা ঘোষণা করে—“আমরা আমাদের স্বপ্নপুরুষদের খুঁজে বের করবো। কারণ ভবিষ্যৎ যাদের সঙ্গে বাঁধা, তারা আমাদের নিছক কল্পনা নয়, তারা সত্যি।”
তিনজন বেরিয়ে পড়ে পথে আসে। নানা বাধা ভূতুড়ে বন, চোর-দস্যুরা, নদীর ভয়াল ঢেউ, মায়াবিনী রাক্ষসী। কিন্তু তারা হার মানে না।
🌕 জ্যোৎস্নার তপস্যা
জ্যোৎস্না এক পর্বতের চূড়ায় গিয়ে তপস্যা করে। চন্দ্রদেবের কৃপায় সে পায় ইঙ্গিত, তার প্রিয়তম আছে নির্বাসনে, এক গুহায়, কারণ সে এক অভিশপ্ত রাজপুত্র।
🔥 সুবর্ণার সাহস
সুবর্ণা এক আগুনে বন্দি দুর্গে প্রবেশ করে। সেখানে সে দেখে তার স্বপ্নের যুবক, অচেতন, এক অভিশাপে আটকে আছে। তার সাহস আর চোখের জলেই ভাঙে শিকল।
💧 রূপবতীর প্রেম
রূপবতী খুঁজে পায় তার প্রেমিককে এক হিমবাহের নিচে ঘুমন্ত অবস্থায়—যার হৃদয় জমে গেছে। তার একমাত্র চুম্বনে ফিরে আসে হৃদয়ের উষ্ণতা।
👑 মিলন ও বার্তা
তিন রাজকন্যা ফিরে আসে তাদের ভালোবাসার পুরুষদের নিয়ে। রাজারা বিস্মিত ও গর্বিত। তিন রাজ্যে উৎসব হয়।
তিন রাজকন্যা প্রমাণ করে, ভবিষ্যৎকে শুধু স্বপ্নে দেখে বসে থাকলে চলবে না। তাকে খুঁজে আনতে হয় সাহস ও ভালোবাসা দিয়ে।
📜 এই গল্প আমাদের শেখায়:
- নারীর স্বপ্নও তার ভবিষ্যৎ গঠনের অনুপ্রেরণা হতে পারে
- সাহসী ভালোবাসা কখনো কখনো অভিশাপ ভাঙতে পারে
- আত্মনির্ভরতা রূপকথাকে সত্য করে তোলে