Home Third Lead বাংলাদেশ সীমান্তঘেঁষা জঙ্গলে ভারতের হাইড্রোকার্বন অনুসন্ধান

বাংলাদেশ সীমান্তঘেঁষা জঙ্গলে ভারতের হাইড্রোকার্বন অনুসন্ধান

ছবি সংগৃহীত

তন্ময় চক্রবর্ত্তী, আগরতলা ( ত্রিপুরা ): ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তঘেঁষা জঙ্গলে গোমতি জেলার দেবতামুরায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ‍শুরু করেছে ভারত। অয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেড গত রবিবার থেকে সেখান অনুসন্ধান কূপ খনন করছে।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের হাইড্রোকার্বন এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড লাইসেন্সিং পলিসি’র অধীনে ত্রিপুরায় তাদের এই প্রথম কার্যক্রম।অয়েল ইন্ডিয়া তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার)-এ এই তথ্য জানিয়ে বলেছে, দেবতামুরা-১ কূপের মাধ্যমে ত্রিপুরার জ্বালানিখাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো। এটি শুধু একটি কূপ খনন নয়, বরং বহু বছরের প্রতীক্ষার অবসান এবং স্বনির্ভর ভারতের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

আগরতলা থেকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দূরে গোমতি জেলার বারামুরা-দেবতামুরা সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভিতরে ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তের নিকটে কূপটির অবস্থান। ভূগোল ও পরিবেশগত দিক থেকে এলাকা অত্যন্ত জটিল। খাড়া ও পুরু জঙ্গলে আচ্ছাদিত এই পার্বত্য অঞ্চল জুড়ে সংকীর্ণ ও আঁকাবাঁকা পাহাড়ি সড়ক। বর্ষাকালে অতিবৃষ্টি ও ভূমিধসে সৃষ্ট সমস্যা এবং ভূতাত্ত্বিকভাবে দুর্বল স্তরের উপস্থিতি কাজটি অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং করে তোলে। এসব বাধার ফলে দীর্ঘদিন ধরে এই ব্লকে কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি।

সব প্রতিকূলতাকে পেছনে ফেলে অয়েল ইন্ডিয়া সাহসিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে অভিযান শুরু করেছে। সংস্থাটি জানায়, ‘সব চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করে এই মুহূর্তে আমরা পৌঁছেছি, এটি অয়েল ইন্ডিয়ার সকল কর্মীর অদম্য চেতনার প্রতিফলন এবং আত্মনির্ভর ভারতের লক্ষ্যের প্রতি আমাদের অঙ্গীকার।’

সরকারের নীতিমালা অনুসারে দেশে নতুন জ্বালানি ব্লক খুঁজে বের করে উৎপাদনের হার বাড়ানোর লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উত্তর-পূর্ব ভারতে শক্তির অপার সম্ভাবনা থাকলেও ভৌগোলিক এবং পরিবেশগত প্রতিবন্ধকতা এতদিন এই অঞ্চলকে অবহেলিত রেখেছে। অয়েল ইন্ডিয়ার এই পদক্ষেপ তাই শুধু অর্থনৈতিক নয়, রাজনৈতিক ও কৌশলগত দিক থেকেও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

এই প্রকল্প সফল হলে ত্রিপুরায় তেল-গ্যাস উৎপাদনের নতুন দিগন্ত খুলে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে রাজ্যের কর্মসংস্থান, অবকাঠামো ও আঞ্চলিক অর্থনীতিতেও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

স্পাডিং অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রূপজ্যোতি ফুকন রিজিওনাল চিফ এক্সিকিউটিভ, অয়েল ইন্ডিয়া; অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল প্রভীন মাথুর, নিরাপত্তা উপদেষ্টা (ডিজিএইচ); সুতীর্থ পাল, যুগ্ম পরিচালক, শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তর, ত্রিপুরা সরকার; চিত্র মোহন বরা, নির্বাহী পরিচালক ও প্রধান, ফ্রন্টিয়ার বেসিন প্রকল্প; অরুণাভ বড়ুয়া, চিফ জেনারেল ম্যানেজার, ফ্রন্টিয়ার বেসিন; পঙ্কজ কুমার বিশ্বাস, জেনারেল ম্যানেজার, গেইল; এবং অয়েল ইন্ডিয়ার অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।