বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার শান্তিপূর্ণ গ্রাম বাবরায় হঠাৎ যেন আগুন লেগেছে। মানুষের মুখে মুখে এখন শুধু একটি নাম, তাসলিমা খাতুন। বয়স চল্লিশ ছুঁই ছুঁই। দুই সন্তানের জননী। একজন বিবাহিত কন্যা ও একটি স্কুলপড়ুয়া ছেলে রেখে এই গৃহবধূ হঠাৎ উধাও! তবে নিখোঁজ নয়, পালিয়ে গেছেন। আর সঙ্গে নিয়ে গেছেন প্রতিবেশী এক কিশোরকে, যার বয়স মাত্র ১৭!
ঘটনার রেশ ধরে এলাকা এখন উত্তাল। বিষণ্ণ চোখে কথা বলছেন তাসলিমার স্বামী মান্নান মিস্ত্রী। তার চোখে-মুখে ক্ষোভ আর হতাশার ছাপ। দীর্ঘ ২২ বছরের দাম্পত্য জীবনের এমন পরিণতি যেন শূন্য করে দিয়েছে সবকিছু। তিনি বলছেন, “১১ তারিখ রাতে পাশের একটি পরিত্যক্ত বিল্ডিংয়ে স্ত্রীকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় পাই মেহেদীর সঙ্গে। সেদিনই বুঝে যাই, কিছু একটা ঘটতে চলেছে। কিন্তু ভেবেছিলাম, চুপ থাকলেই সংসারটা বাঁচবে। কে জানত সকালে ঘুম ভাঙবে স্ত্রীহীন হয়ে!”
তাসলিমা যে ছেলেটির সঙ্গে পালিয়ে গেছেন, সে মেহেদী হাসান। বয়স ১৭। সম্পর্কে বলতে গেলে, তাসলিমার নাতি হওয়ারই কথা ছিল। মেহেদীর শৈশব কেটেছে তার নানাবাড়িতে, তবে বর্তমান ঠিকানা বাবরা গ্রামেই। বাড়ির পাশের বাড়ির ছেলে মেহেদী ও গৃহবধূর ঘনিষ্ঠতা দিনকে দিন বেড়েই চলেছিল, জানাচ্ছেন প্রতিবেশীরা। সেই ঘনিষ্ঠতা পরিণত হয় নিষিদ্ধ প্রেমে। অবশেষে সে প্রেমই সংসারভাঙার খলনায়ক!
পালিয়ে যাওয়ার পর থেকেই মেহেদীর মোবাইল বন্ধ। তার বাবা টোটন মণ্ডল বলছেন, “আমি নিজেও খোঁজে পাচ্ছি না ছেলেকে। তার ফোন বন্ধ। কোথায় গেল, কার সঙ্গে যোগাযোগে আছে কিছুই জানি না।”
এমন ঘটনায় শুধু মান্নান মিস্ত্রী নন, স্তব্ধ হয়ে গেছেন গোটা গ্রাম। কেউ বলছেন সমাজে এমন উদাহরণ রীতিমতো অশনি সংকেত। কেউ বলছেন, ‘এই ঘটনায় কারও প্রেম না, পরকীয়া নামের বিষ-জল ঢুকেছে গোটা সমাজে।’ কেউ আবার প্রশ্ন তুলেছেন, “একজন পরিণতবয়স্ক নারী কীভাবে একজন নাবালকের সঙ্গে প্রেমে জড়াতে পারে?”
সামাজিক ও পারিবারিক শুদ্ধতার ভিতে এমন ঘটনা যেন কুঠারাঘাত করেছে। ছোট ছেলেটি এখন ভয়ে সিঁটিয়ে থাকে, মায়ের খোঁজে মুখ গুঁজে কাঁদে। বাবার কণ্ঠেও স্পষ্ট আর্তি, “আমি বিচার চাই। নাবালক ছেলের জীবনটা তো নষ্ট হয়ে গেল। আমার সংসারও গেল ভেঙে!”
স্থানীয় প্রশাসনের কাছে এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক। পাশাপাশি তারা চান সমাজে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে পরিবার ও সমাজকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।
সচেতন নাগরিকদের মতে, এটি নিছক একটি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা নয়—এটি সামাজিক অবক্ষয়ের জ্বলন্ত প্রতিচ্ছবি।