Home সারাদেশ প্রেম থেকে বিয়ে, তারপর মৃত্যুর ফাঁদে লামিয়া

প্রেম থেকে বিয়ে, তারপর মৃত্যুর ফাঁদে লামিয়া

বর্ষা ও সিয়াম
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, বরিশাল: বরিশালের আল মাদানী সড়কের একটি বাসায় বিয়ের তিন মাসের মধ্যেই লামিয়া আক্তার বর্ষা নামের এক তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ প্রাথমিকভাবে এটিকে হত্যাকাণ্ড বলে ধারণা করছে।

প্রতিবেশীরা জানান, রাত ১০টার দিকে তারা বর্ষার বাসা থেকে চিৎকারের শব্দ শুনতে পান। কিছুক্ষণ পরেই সবকিছু নিস্তব্ধ হয়ে যায়। তারা দৌড়ে গিয়ে দেখতে পান, দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। পরে পুলিশ এসে দরজা খুলে খাটের ওপর বর্ষার নিথর দেহ দেখতে পায়। ঘটনার পর থেকে বর্ষার স্বামী সিয়ামসহ শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা পলাতক রয়েছেন।

লামিয়ার বাবা মো. বেলায়েত খান জানান, বিয়ের পর থেকেই মেয়ের সঙ্গে সিয়াম ও তার পরিবারের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না। তিনি বলেন, “বর্ষা ফোনে প্রায়ই কাঁদত, বলত তারা তাকে মারধর করে। গত রাতে ফোনে অসুস্থতার খবর পাই, ছুটে গিয়ে দেখি খাটের ওপর মেয়ের মৃতদেহ পড়ে আছে।”

স্থানীয় বাসিন্দারাও জানান, বিয়ের পর থেকেই বর্ষা ও সিয়ামের মধ্যে পারিবারিক কলহ চলছিল। তারা প্রায়ই ঝগড়া করতেন।

বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি হত্যাকাণ্ড হতে পারে। ঘটনার পর থেকে শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা গা-ঢাকা দিয়েছে।

এদিকে দুজন নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বর্ষা সরকারি বরিশাল কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। প্রেমের সম্পর্ক থেকে তিন মাস আগে সিয়ামের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। প্রথম দিকে সম্পর্ক ভালো থাকলেও পরে পারিবারিক বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, বর্ষার গলায় মোবাইল চার্জারের তার প্যাঁচানোর চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যা—তা নির্ধারণে তদন্ত চলছে।

শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে ময়নাতদন্তের পরই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছে তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তরুণ বয়সে এভাবে এক promising শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে স্থানীয়রা ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। বর্ষার পরিবারের সদস্যরা দ্রুত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।