বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন খাতে ট্যারিফ বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে ক্ষোভে ফুঁসছে বন্দরনির্ভর ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিরা। শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনসহ একাধিক ব্যবসায়ী সংগঠন এ বৃদ্ধিকে ‘অস্বাভাবিক ও অযৌক্তিক’ আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে তা স্থগিতের দাবি জানিয়েছে।
চট্টগ্রাম বাংলাদেশের বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র ও দেশের রপ্তানি-আমদানি কার্যক্রমের প্রধান প্রবেশদ্বার। বন্দর খাতে হঠাৎ মাশুলবৃদ্ধির ফলে রপ্তানি খরচ, আমদানি ব্যয়, কনটেইনার হ্যান্ডলিং, ওয়্যারহাউজিং, ট্রান্সপোর্ট খরচ এবং লজিস্টিকস সেবার ওপর সরাসরি প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর ফলে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের কাছে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান দুর্বল হতে পারে।
একইসঙ্গে, মাশুলবৃদ্ধির ধাক্কায় কাঁচামাল আমদানিতে ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বস্ত্র, চামড়া, প্লাস্টিক, ওষুধ, নির্মাণসামগ্রী, খাদ্যপণ্য ও ইলেকট্রনিক্স শিল্প খাতে উৎপাদন খরচ বাড়বে। এতে সাধারণ ভোক্তাদের ওপরও মূল্যবৃদ্ধির চাপ সৃষ্টি হতে পারে। ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীরাও এতে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এই প্রেক্ষাপটে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতি ও চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (সিসিসিআই) আসন্ন নির্বাচনে ‘ওয়ান টিম’ প্যানেলের নেতৃত্বে থাকা মোহাম্মদ আমিরুল হক ব্যবসায়ী নেতাদের নিয়ে এক জরুরি মতবিনিময় সভা আহ্বান করেছেন। সভাটি অনুষ্ঠিত হবে রবিবার (১২ অক্টোবর) দুপুর ১২টায়, চট্টগ্রামের মোহনা–৩, লেভেল–৪, রেডিসন ব্লু হোটেলে।
সভায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন বাণিজ্যিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। এতে মাশুলবৃদ্ধির প্রভাব, সম্ভাব্য সমাধান ও ব্যবসায়ী ঐক্যের মাধ্যমে সরকারের কাছে যৌথ প্রস্তাব পেশের বিষয়টি আলোচিত হবে।
আমিরুল হক সভার আমন্ত্রণপত্রে বলেন, “আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ হই, তাহলে শক্তিশালীভাবে ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা ও এই সংকটের সমাধান বের করা সম্ভব হবে। আমাদের ঐক্যই আমাদের শক্তি ও প্রেরণা।”
বন্দরের মাশুলবৃদ্ধি নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে বাণিজ্যিক মহলে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এই অস্থিরতা দ্রুত নিরসন না হলে দেশের রপ্তানি প্রতিযোগিতা, বৈদেশিক মুদ্রা আয় ও শিল্পোন্নয়ন—সব ক্ষেত্রেই বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।