Home First Lead সিলেট বিএনপিতে মনোনয়ন ঘিরে জটিলতা ও রাজনৈতিক উত্তেজনা

সিলেট বিএনপিতে মনোনয়ন ঘিরে জটিলতা ও রাজনৈতিক উত্তেজনা

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, সিলেট: সিলেট বিভাগে মোট ১৯টি সংসদীয় আসনের মধ্যে বিএনপি ইতিমধ্যেই ১৪টিতে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে। বাকি ৫টি আসন এখনও ফাঁকা থাকায় রাজনৈতিক মহলের নজর এখনো এই আসনগুলোর দিকে। আসনগুলোর ভাগ-বণ্টন ও জোটের হিসাব কী হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। বিশেষত সিলেট-৪, সিলেট-৫ এবং সুনামগঞ্জের কয়েকটি আসন নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে।

সিলেট-৪ আসনটি এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি আলোড়ন সৃষ্টি করছে। বিএনপি আগে এখানে সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে প্রার্থী হিসেবে চাইলেও তিনি এ আসনে অংশ নেননি। এ আসনের আলোচনায় এগিয়ে রয়েছেন কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী। তিনি ভোটের মাঠে সক্রিয়ভাবে শোডাউন দিয়েছেন এবং দলের মূল্যায়নের আশায় রয়েছেন। এছাড়া সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা এডভোকেট শামসুজ্জামান জামান এবং যুগ্ম মহাসচিব পদমর্যাদার আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ূন কবিরও সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন।

জোটভিত্তিক হিসাবও সিলেট-৪ আসনে জটিল। জমিয়তের কেন্দ্রীয় আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট মোহাম্মদ আলীর প্রভাবও রয়েছে। জোটগত সমঝোতার মাধ্যমে বিএনপি ও জোটের শরিকরা এই আসনের ভাগ-বণ্টন চূড়ান্ত করবে।

সিলেট-৫ আসনেও জটিলতা কম নয়। এ আসনে বিএনপি প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুককে বিবেচনা করছে। আগে ২০১৮ সালে ঐক্যফ্রন্টের মনোনয়ন নিয়ে তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু জয় পাননি। এবার বিএনপি’কে সরাসরি প্রার্থী ঘোষণা না করে অপেক্ষা করাতে কিছু মনোনয়নপ্রার্থী, যেমন মামুনুর রশীদ চাকসু মামুন, কিছুটা ক্ষুব্ধ। দলীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় বিএনপি সমর্থকরা এখন অধীর আগ্রহে রয়েছেন।

সুনামগঞ্জ-২ আসনে বিএনপি এখনও প্রার্থী দেয়নি। এখানে যোগ্য প্রার্থী খুঁজছে দল। সাবেক এমপি নাছির উদ্দিন চৌধুরী অসুস্থ থাকায় প্রচারণায় সরাসরি অংশ নিতে পারেননি। তবে বিএনপি নেতা তাহির রায়হান চৌধুরী পাভেল মাঠে সক্রিয়ভাবে শোডাউন দিয়েছেন। সুনামগঞ্জ-৪ সদর আসনেও এখনও প্রার্থী ঘোষণা হয়নি। এখানে হাসান রাজা পরিবারের প্রভাব রয়েছে। স্থানীয়ভাবে এনসিপি’র প্রার্থী দেওয়ান সাজাউর রাজা আলোচনায়, যা জোটভিত্তিক সমঝোতা ও ভবিষ্যৎ নির্বাচনী পরিস্থিতি স্পষ্ট করবে।

হবিগঞ্জ-১ আসনেও উত্তেজনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নবীগঞ্জ ও বাহুবল উপজেলাকে অন্তর্ভুক্ত এই আসনে বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি শেখ সুজাত মিয়াকে মনোনয়ন না দিয়ে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএসএম কিবরিয়াপুত্র রেজা কিবরিয়াকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। তিনি ইতিমধ্যেই দলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক যোগদানের বিষয়ে চূড়ান্ত আলোচনা করেছেন এবং স্থানীয় নেতাদের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।

সিলেট বিভাগের এই ফাঁকা থাকা আসনগুলো নিয়ে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্বে রয়েছেন বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগ) জিকে গউছ। তিনি জানিয়েছেন, সব ফাঁকা আসনই শরিকদের ছেড়ে দেওয়া হবে না; কিছু আসনে দলীয় প্রার্থীও থাকবে। কেন্দ্রীয় কমিটি খুব দ্রুততম সময়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে।