বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ পদত্যাগ সংক্রান্ত গুজব ছড়ানোর ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সোমবার (১৯ মে) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “সারাদিন খালি গুজব ছড়ায় আমি পদত্যাগ করছি। বাজারে কি এর একটা প্রভাব পড়ে না?”
সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে নির্ধারিত এ বৈঠক ঘিরেই রোববার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও কিছু গণমাধ্যমে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে, তিনি নাকি পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন। এমনকি কয়েকটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমে এ নিয়ে সংবাদও প্রকাশিত হয়। এরই প্রেক্ষাপটে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিএসইসি চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, “আপনারা তো আগেভাগেই নিউজ বানিয়ে ফেলেছেন। কোথা থেকে এসব খবর বানানো হয়? আমি এসেছিলাম প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া পাঁচটি দিকনির্দেশনা নিয়ে আলোচনা করতে। সেখানে বাজার সংশ্লিষ্ট কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল। অথচ আমি সচিবালয়ে ঢুকতেই গুজব রটে গেল, আমি বুঝি পদত্যাগ করছি।”
তিনি আরও বলেন, “এই ধরনের ভুয়া খবরে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এমন আচরণ দায়িত্বশীল গণমাধ্যমের হওয়া উচিত নয়। আমি স্পষ্ট করে বলছি, আমি কাজ করতে এসেছি। গুজব রটিয়ে আমাকে দমিয়ে রাখা যাবে না।”
সাক্ষাৎ শেষে তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনার বেশিরভাগ অংশই আমাদের নয়, বরং অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। তবে কে কীভাবে দায়িত্ব নেবে, সে বিষয়ে সমন্বয়ের আলোচনা হয়েছে।”
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, “আমি সাত বছর নিউইয়র্কে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছি। সেখানে আমার বেতন, বোনাস, সবকিছুই নিউইয়র্ক থেকে হত। আমি চাইলেই আর দেশে ফিরতাম না। কিন্তু দেশের জন্য কিছু করতে চেয়েছি বলেই সরকারি চাকরিতে যোগ দিয়েছি। এখন যদি বলা হয়, আমি আমেরিকায় চলে যাব, তা হলে এ ধরনের খবরের মানে কী?”
তিনি আরও বলেন, “এখন বাজেটের সময়। বাজারে প্রাণ ফেরানোর জন্য আমরা কাজ করছি। এর মধ্যেই গুজব ছড়ানো হলে, সেটি বাজারের জন্যও ক্ষতিকর।”
উল্লেখ্য, খন্দকার রাশেদ মাকসুদ এর আগে প্রাইভেট ব্যাংকিং খাতের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তিনি শেয়ারবাজারে স্বচ্ছতা ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছেন। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে ধস, বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতা এবং একাধিক কারিগরি জটিলতা তাঁকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে।