আনোয়ার আহমেদ, কুয়ালালামপুর ( মালয়েশিয়া): মালয়েশিয়ায় এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর রহস্যজনক হত্যাকাণ্ড ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ২০ বছর বয়সী মানিশাপ্রীত কৌর আখারা নামের ওই ছাত্রীকে সাইবারজায়ার একটি শিক্ষার্থীদের আবাসন থেকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে শোক ও ক্ষোভের ঝড় উঠেছে, বিশেষ করে শিক্ষার্থী মহলে।
ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে্ তাদের বয়স ১৯ ও ২০ বছরের মধ্যে। সন্দেহভাজনরা নিহত ছাত্রীর পূর্বপরিচিত বলে পুলিশের ধারণা। আটককৃতদের মধ্যে একজন পুরুষ এবং দুজন নারী রয়েছেন। তাদের যথাক্রমে জোহর বাহরু ও নেগরি সেমবিলানের গেমেনচেহ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সেপাং পুলিশের প্রধান সহকারী কমিশনার নোরহিজাম বাহামান জানিয়েছেন, ঘটনার পরপরই একটি অভিযোগ দায়ের হলে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার অভিযান পরিচালনা করা হয়। তিনি জানিয়েছেন, গ্রেপ্তার হওয়া তিনজনকে সাতদিনের জন্য রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মানিশাপ্রীত কৌর একজন ফিজিওথেরাপি বিভাগের ছাত্রী ছিলেন এবং তিনি কুচিং শহর থেকে এসে সাইবারজায়ার একটি শিক্ষার্থী ডরমিটরিতে বসবাস করছিলেন। তিনি আরও পাঁচজন সহপাঠীর সঙ্গে থাকলেও ছুটির কারণে বাকিরা বাসায় ফিরে গিয়েছিলেন। এই নিঃসঙ্গ অবস্থাতেই হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এখন পর্যন্ত ১৪ জনের জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে নিহতের রুমমেটরা ও একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকও রয়েছেন।
ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। বহু শিক্ষার্থী ও তরুণ-তরুণী নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও অভিভাবকরাও নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানিয়েছেন।
মালয়েশিয়ার জাতীয় পত্রিকাগুলিতেও ঘটনাটি গুরুত্বসহকারে প্রকাশিত হয়েছে। সামাজিক ন্যায়বিচার এবং ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, মামলাটি হত্যা (সেকশন ৩০২, পেনাল কোড) ধারায় রুজু করা হয়েছে। তদন্ত অব্যাহত রয়েছে এবং হত্যার মোটিভ নির্ধারণের চেষ্টা চলছে।
এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত নিহতের পরিবারের সদস্যরা কুচিং থেকে সাইবারজায়ার রওনা দিয়েছেন এবং তারা মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।