Home First Lead রাজধানীতে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ৬ জন দগ্ধ

রাজধানীতে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ৬ জন দগ্ধ

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: রাজধানীর বংশালের বাংলাদেশ মাঠ এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে ছয়জন দগ্ধ হয়েছেন। তারা হলেন, রিমঝিম (১৬), মেহেদী হাসান(২৫), সাগর (২৫), ইকবাল(৩৩), নয়ন (২৯) ও অপূর্ব (১৮)।

জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা শাওন বিন রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বংশাল এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ অবস্থায় ৬ জনকে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। তাদের মধ্যে রিমঝিমের শরীরে বার্ন ইনজুরি, মেহেদী হাসানের শরীরের ১ শতাংশ, সাগরের শরীরে ১১ শতাংশ, ইকবালের শরীরের ২ শতাংশ, নয়নের শরীরের ৭ শতাংশ অপূর্বর শরীরের এক শতাংশ শরীর বার্ন হয়েছে। তাদের মধ্যে সাগরকে ভর্তি দেওয়া হয়েছে বাকিদের জরুরি বিভাগে অবজারবেশনে রাখা হয়েছে।

গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের নানা কারণ:

১. সিলিন্ডারের বিশ্রাম: সিলিন্ডার পরিবহনের পর চুলার সঙ্গে সংযোগ দেওয়ার আগে প্রায় এক ঘণ্টা বিশ্রাম নিশ্চিত করতে হবে। এতে সুরক্ষা নিশ্চিত হবে।

২. ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় সিলিন্ডার স্থাপন না করা: একটি সাধারণ ভুল হলো গ্যাস সিলিন্ডার অনুপযুক্ত জায়গায় রাখা। গ্যাস সিলিন্ডার সূর্যের আলোতে, প্রচণ্ড তাপে বা দাহ্য পদার্থের কাছাকাছি স্থানে রাখলে সিলিন্ডারের ক্ষতি বা বিস্ফোরণের ঝুঁকি বাড়তে পারে। গ্যাস সিলিন্ডার সবসময় দাহ্য পদার্থ থেকে নিরাপদ দূরত্বে এবং খোলামেলা, শীতল এবং শুষ্ক জায়গায় স্থাপন করতে হবে। সিলিন্ডারটিকে সবসময় সোজা রাখতে হবে।

৩. সিলিন্ডারের রক্ষণাবেক্ষণ: অনিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ গ্যাস সিলিন্ডারকে বিপজ্জনক পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যেতে পারে। এজন্য নিয়মিত ভালভ ও সংযোগস্থলে সাবান পানির দ্রবণ প্রয়োগ করে গ্যাসের লিক পরীক্ষা করতে হবে। এ সময় বুদবুদের সন্ধান পাওয়া গেলে কিংবা লিকেজ শনাক্ত করা হলে অবিলম্বে সহায়তার জন্য কোনো অভিজ্ঞ পেশাদার ব্যক্তির সাহায্য নিতে হবে। এ ছাড়াও সিলিন্ডারটি নিয়মিত মুছে রাখতে হবে, যাতে কখনও মরিচা না ধরে।

৪. ভুল সংযোগ: চুলার সাথে গ্যাস সিলিন্ডারের সংযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সংযোগে কোনো ত্রুটিবিচ্যুতি থাকলে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এজন্য সংযোগগুলো ঠিক আছে কিনা ও কোথাও লিকেজ আছে কি না নিশ্চিত করতে হবে। ব্যবহৃত চুলার কোথাও কোনো লিকেজ আছে কি না, তাও নিশ্চিত করতে হবে।

৫. বায়ুচলাচল উপেক্ষা করা: গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করার সময় অপর্যাপ্ত বায়ুচলাচল স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। গ্যাসের যন্ত্রগুলো অক্সিজেন গ্রহণ করে। একইসঙ্গে কার্বন মনোক্সাইড উৎপন্ন করে, যা আবদ্ধ স্থানের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। এজন্য রান্নাঘরে, বিশেষ করে বাসাবাড়িতে কিংবা ছোট কক্ষে বাতাস চলাচল নিশ্চিত করার জন্য সব সময় জানালা খুলে বা এক্সজস্ট ফ্যান ব্যবহার করে সঠিকভাবে বায়ু চলাচল নিশ্চিত করতে হবে।

সর্বপরি, গ্যাস সিলিন্ডারের সুরক্ষা সম্পর্কে জ্ঞানের অভাব একটি সাধারণ ভুল, যা অধিকাংশ পরিবার করে। এজন্য গ্যাস সিলিন্ডারের সঙ্গে সম্পর্কিত সম্ভাব্য ঝুঁকি এবং কীভাবে সেগুলো নিরাপদে পরিচালনা করা যায় সে সম্পর্কে পরিবারের সব সদস্যকে শেখাতে হবে। প্রয়োজনে বাসায় ফায়ার এক্সটিংগুইশারের ব্যবস্থা রাখতে হবে।