বিনোদন ডেস্ক: নৃত্য ও পোশাকের মাধ্যমে ‘নৈতিক অবক্ষয়’ ছড়ানোর অভিযোগে মিশরে গ্রেপ্তার হয়েছেন ইতালির নাগরিক ও বেলিড্যান্সার সোহিলা তারেক হাসান হাগগাগ। তিনি মঞ্চে লিন্ডা মার্তিনো নামে পরিচিত। ২২ জুন কায়রো বিমানবন্দর থেকে তাকে আটক করে পুলিশ।
সোহিলা মিশরেই জন্মগ্রহণ করেছেন এবং মিশরীয় নাগরিকত্বের পাশাপাশি ইতালির নাগরিকত্বও পেয়েছেন। ইনস্টাগ্রামে তার অনুসারীর সংখ্যা দুই মিলিয়নের বেশি। সেখানকার কিছু ভিডিওকে কেন্দ্র করেই তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে প্রশাসন। তার নাচ এবং পরিধান ‘নৈতিক বিভ্রান্তি’ তৈরি করছে বরে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ।
রাষ্ট্রপক্ষের ভাষ্য অনুযায়ী, “তার পরিহিত পোশাক স্পষ্টভাবে সামাজিক রীতিনীতির পরিপন্থী। ভিডিওতে দেখা গেছে, তিনি অঙ্গভঙ্গি ও নৃত্যের মাধ্যমে প্রলোভন তৈরি করেছেন।”
গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ উদ্ধার করা হয়, যা প্রশাসনের দাবি অনুযায়ী ‘অশ্লীল কর্মকাণ্ড থেকে উপার্জিত’। একইসঙ্গে মিশরের উত্তর উপকূলে একটি ক্যাবারে তার পারফরম্যান্স নিয়েও আলাদা তদন্ত শুরু হয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “লিন্ডা মার্তিনো নাচের ভঙ্গিমায় প্রলোভনের কৌশল ব্যবহার করেছেন এবং জনসমক্ষে যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ আচরণ করেছেন।”
এ ঘটনায় কায়রোতে ইতালির দূতাবাস দ্রুত ব্যাখ্যা চেয়ে মিশরীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।
গত কয়েক বছরে মিশরে বেলিড্যান্সারদের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ নতুন নয়। সামাজিক মূল্যবোধ রক্ষার নামে এই শিল্পীদের ওপর নজরদারি ও দমন-পীড়ন বেড়েছে। প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির সময়কালেই কমপক্ষে পাঁচজন বেলিড্যান্সার একই অভিযোগে কারাবরণ করেছেন বলে জানিয়েছে ইতালির সংবাদমাধ্যম।
রাশিয়ান বেলিড্যান্সার ক্যাটেরিনা আন্দ্রেভাও ‘অশালীন নৃত্য পরিবেশন’-এর অভিযোগে এক বছরের জেল খেটেছেন।
এই পরিস্থিতিতে ইউনেস্কো বেলিড্যান্সকে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। তবে মিশরে এই শিল্প চর্চা বর্তমানে প্রবল বাধার মুখে।
বেলিড্যান্সের ঐতিহ্য রক্ষা ও সামাজিক মর্যাদা ফেরাতে কাজ করে চলেছেন মিশরের খ্যাতনামা অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী আমি সুলতান। তিনি বিশ্বাস করেন, সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি ফিরিয়ে আনা গেলে এই শিল্প আবার সম্মান ফিরে পাবে।