Home অন্যান্য ভাই-বোন হয়েও বিয়ে: দম্পতির ৫০ বছরের কারাদণ্ড

ভাই-বোন হয়েও বিয়ে: দম্পতির ৫০ বছরের কারাদণ্ড

ছবি: সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: তাঞ্জানিয়ার সিমিউ অঞ্চলে এক দম্পতির বিরুদ্ধে রক্তসম্পর্কীয় বিয়ে ও সন্তানের জন্মদানের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাদের মোট ৫০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। পরে জানা যায়, যাদের সবাই স্বামী–স্ত্রী ভেবে এসেছে, তারা আসলে সহোদর ভাইবোন।

৩২ বছর বয়সী মুসা শিজা ও তার ৩৬ বছর বয়সী স্ত্রী হোলো শিজা ২০১৮ সাল থেকে স্বামী–স্ত্রী হিসেবে বসবাস করছিলেন। তারা কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন এবং তাদের একটি সন্তানও রয়েছে। তবে ২০২৪ সালে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে, তারা একই পিতা-মাতার সন্তান।

পুলিশ পরিদর্শক ভেদাস্তাস ওয়াজাঙ্গার নেতৃত্বে পরিচালিত মামলায় জানা যায়, মুসা ও হোলো ২০১৮ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৩০ জুলাই পর্যন্ত একসঙ্গে সংসার করেছেন। তদন্তের অংশ হিসেবে ডিএনএ পরীক্ষা ও ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত নিশ্চিত হয়, তারা আসলেই সহোদর ভাইবোন।

আদালতের বিচারক আজিজ বলেন, সহোদরদের মধ্যে বিবাহ তাঞ্জানিয়ার দণ্ডবিধির ১৫৮ (বি) ও ১৬০ ধারার স্পষ্ট লঙ্ঘন, যা ২০২২ সালের সংশোধিত আইনে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।

২০২৫ সালের ১২ আগস্ট প্রথমবার আদালতে হাজির হলে মুসা ও হোলো নিজেদের দোষ স্বীকার করেন। আদালত তখন মুসাকে ২০ বছর ও হোলোকে ৩০ বছরের কারাদণ্ড দেন। পরে তারা উচ্চ আদালতে আপিল করলে পুনরায় মামলার শুনানির নির্দেশ দেওয়া হয়।

২০২৫ সালের ৬ মে নতুন করে শুনানি শুরু হলে দুজনেই অভিযোগ অস্বীকার করেন। কিন্তু পুনরায় করা ডিএনএ পরীক্ষায় ৯৯.৯ শতাংশ মিল পাওয়া যায় তাদের সন্তানের রক্তের সঙ্গে, যা তাদের ভাইবোন সম্পর্কের চূড়ান্ত প্রমাণ দেয়।

আত্মপক্ষ সমর্থনে মুসা জানান, তিনি বৈধভাবে হোলোকে বিয়ে করেছেন এবং তার নানিকে তিন লাখ তাঞ্জানিয়ান শিলিং (প্রায় ১৫,৭০০ কেনিয়ান শিলিং) যৌতুক হিসেবে দিয়েছেন। হোলোও একই দাবি করেন, মুসা তার আইনসঙ্গত স্বামী। তারা আরও বলেন, যিনি তাদের পিতা বলে দাবি করছেন—মজি শিজা কামুগা—তিনি আসলে কেবল তাদের প্রতিবেশী, যিনি তাদের বিয়ে মেনে নিতে পারেননি।

তবে আদালত তাদের দাবি প্রত্যাখ্যান করে রায় দেন রক্তসম্পর্কীয় বিয়ে ও সন্তান জন্মদান আইনত অপরাধ। ফলে উভয়কে মোট ৫০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এই ঘটনা বর্তমানে তাঞ্জানিয়া জুড়ে তীব্র আলোচনার জন্ম দিয়েছে। গ্রামীণ সমাজে বংশপরিচয় যাচাইয়ের গুরুত্ব ও পারিবারিক সম্পর্কের জটিলতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।