স্পোর্টস ডেস্ক: আজ রবিবার এশিয়া কাপের মঞ্চে মুখোমুখি হচ্ছে ভারত ও পাকিস্তান মহিলা দল। টুর্নামেন্টে এ পর্যন্ত তিন বার মুখোমুখি হয়ে প্রতিবারই পাকিস্তানকে হারিয়েছে ভারত। এবারও পরিস্থিতি অনেকটাই একই রকম—ভারত জিতেছে প্রথম ম্যাচ, আর পাকিস্তান হেরেছে বাংলাদেশের কাছে।
এক দিনের ফরম্যাটে এখনও পর্যন্ত পাকিস্তান কখনও ভারতের বিরুদ্ধে জিততে পারেনি। তাদের সাম্প্রতিক ফর্ম এবং দলের গঠন দেখে মনে হচ্ছে, ইতিহাস বদলানো এবারও কঠিন। অন্যদিকে, ভারতের দল এখন ছন্দে রয়েছে—ওপেনিং ব্যাটার থেকে শুরু করে স্পিন আক্রমণ পর্যন্ত সব বিভাগে আত্মবিশ্বাসী ‘উইমেন ইন ব্লু’।
🇮🇳 ভারতের শক্তি
১. মারকাটারি ওপেনিং জুটি
স্মৃতি মন্ধানা ও প্রতীকা রাওয়াল বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম সেরা ওপেনিং জুটি। যদিও শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে মাত্র ১৪ রানের জুটি হয়েছে, তবে বিশ্বকাপের আগে ১৪ ইনিংসে তারা ১০৮৬ রান করেছে—ছয়টি ৫০ ও চারটি ১০০ রানের জুটি গড়ে। এই বছর একমাত্র জুটি হিসেবে ১০০০ রানের গণ্ডি পেরিয়েছে তারা। ঘরের মাঠে গড় রান ১১৬.৮৩—যা পাকিস্তানের জন্য বড় চিন্তার কারণ।
২. স্পিন বিভাগে আধিপত্য
উপমহাদেশের মাটিতে স্পিনাররা ম্যাচের গতিপথ ঠিক করে দেন, আর ভারত সেই জায়গায় স্পষ্টভাবে এগিয়ে। প্রথম ম্যাচে ভারতের স্পিনাররা নিয়েছে আটটি উইকেট। দীপ্তি শর্মা ও স্নেহ রানার অভিজ্ঞ বোলিংয়ের সঙ্গে যোগ হয়েছে তরুণ শ্রী চরণীর উত্থান—যিনি এ বছরের অন্যতম সেরা আবিষ্কার।
🇵🇰 পাকিস্তানের শক্তি
১. যোগ্যতা অর্জনে ধারাবাহিকতা
যোগ্যতা অর্জন পর্বে পাঁচটি ম্যাচেই জয় পেয়ে বিশ্বকাপের টিকিট কাটে পাকিস্তান। যদিও বাংলাদেশ ম্যাচে হার, কিন্তু মুনিবা আলি ও আলিয়া রিয়াজের মতো ক্রিকেটাররা ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার সামর্থ্য রাখেন।
২. তরুণ অধিনায়কের নেতৃত্বে উজ্জ্বল আশা
মাত্র ২২ বছর বয়সে ফতিমা সানা দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। প্রথম ম্যাচে দল হারলেও ব্যাট ও বলে ভালো পারফরম্যান্স করেছেন। তাঁর কৌশলগত বুদ্ধি পাকিস্তানের আশার আলো হতে পারে।
🇮🇳 ভারতের দুর্বলতা
১. বোলিংয়ে বৈচিত্র্যের ঘাটতি
ভারতের পেস ও স্পিন আক্রমণে একঘেয়েমি রয়েছে। রেণুকা সিং ও ক্রান্তি গৌড়ের বোলিং একই ধাঁচের। লেগস্পিনার না থাকায় প্রতিপক্ষ ব্যাটাররা সহজেই বোলিং পড়তে পারছে। দীপ্তি ও রানার মতো অফস্পিনারদের উপর অতিনির্ভরতা দলের ক্ষতি করতে পারে।
২. মিডল অর্ডারে অনিশ্চয়তা
টপ অর্ডার ব্যর্থ হলে মিডল অর্ডারের উপর নির্ভর করা কঠিন। আগের ম্যাচে দীপ্তি রান পেয়েছেন, কিন্তু জেমাইমা রদ্রিগেস ও রিচা ঘোষ ব্যর্থ। শেষ দিকে আমনজ্যোত কউর না খেললে ভারতের ইনিংস আড়াইশো পার হতো না—এই সমস্যা এখনও রয়ে গেছে।
🇵🇰 পাকিস্তানের দুর্বলতা
১. ধারাবাহিকতা ও স্থিতিশীলতার অভাব
গত আইসিসি চ্যাম্পিয়নশিপে পাকিস্তান ২৪ ম্যাচে মাত্র আটটি জয় পেয়েছিল, নবম স্থানে শেষ করেছিল। অধিনায়ক বদলের ধারা দলকে অস্থির করে তুলেছে। বোর্ডের আত্মবিশ্বাসের অভাব মাঠেও প্রতিফলিত হচ্ছে।
২. ব্যাটিং ও বোলিংয়ে ভারসাম্যহীনতা
মুনিবা আলির বাইরে নির্ভরযোগ্য ব্যাটার নেই। বিসমাহ মাহরুফ ও জাভেরিয়া খানের অবসরের পর মিডল অর্ডার দুর্বল হয়ে পড়েছে। নিদা দার না থাকায় বোলিংয়েও ধার কমেছে।
এশিয়া কাপের ইতিহাস, সাম্প্রতিক ফর্ম ও দলীয় পরিসংখ্যান—সব দিক থেকেই ভারত এগিয়ে। পাকিস্তানের সম্ভাবনা থাকলেও তাদের জয় নির্ভর করছে এক বা দুই ক্রিকেটারের ঝলকের উপর। অন্যদিকে, ভারতীয় মহিলা দল এখন এমন এক অবস্থানে, যেখানে একত্রে পারফরম্যান্সই তাদের জয় এনে দিতে পারে।
📅 ম্যাচের দিন: রবিবার
📍 স্থান: (টুর্নামেন্ট আয়োজক দেশের স্টেডিয়াম)
🕒 সম্ভাব্য সময়: দুপুর ৩টা (বাংলাদেশ সময়)