বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: কাশ্মীরের পাহালগামে পর্যটক হত্যাকাণ্ডের জেরে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার প্রভাব এখন ছড়িয়ে পড়েছে আন্তর্জাতিক আকাশপথে। এয়ার ফ্রান্স, লুফথানজা, ব্রিটিশ এয়ারওয়েজসহ একাধিক বড় এয়ারলাইন পাকিস্তানের আকাশসীমা এড়িয়ে বিকল্প পথে উড়ছে। এতে একদিকে যেমন ফ্লাইট বিলম্ব ও জ্বালানি ব্যয় বাড়ছে, তেমনি পাকিস্তান হারাতে বসেছে কোটি কোটি টাকার সম্ভাব্য আয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই এয়ারস্পেস বয়কট পাকিস্তানের জন্য আর্থিকভাবে বড় ধাক্কা। সাধারণত প্রতিটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহারের জন্য বিমান ও রুট অনুযায়ী কয়েকশো ডলার করে ফি দিয়ে থাকে। একাধিক আন্তর্জাতিক উড়োজাহাজ প্রতিদিন পাকিস্তানের আকাশ ব্যবহার করত, সেখান থেকে পাকিস্তানের বার্ষিক বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হতো।
কিন্তু এখন সেই আকাশসীমা কার্যত খালি।
এয়ার ফ্রান্স জানিয়েছে, “ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের আকাশপথ ব্যবহার আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।”
লুফথানজাও জানিয়েছে, তারা নিরাপত্তার কারণে একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এছাড়া ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ ও সুইস ইন্টারন্যাশনালও বিকল্প রুটে চলাচল করছে, যা আরব সাগর হয়ে দীর্ঘ পথ ঘুরে ভারতের দিকে যাচ্ছে। এতে ফ্লাইটের সময় ও খরচ দুটোই বাড়ছে।
উল্লেখ্য, পাহালগামে ২৬ জন পর্যটককে হত্যার ঘটনায় ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করলেও ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করেছে। এরপর থেকেই দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়, যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আকাশসীমা বন্ধ রাখা।
কাশ্মীর ইস্যু নতুন করে আবার আন্তর্জাতিক ভ্রমণব্যবস্থার ওপর চাপ ফেলছে, বিশেষ করে এমন সময়ে যখন বিশ্বজুড়ে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্র ঘিরেও বিমান চলাচল সীমিত হচ্ছে।
কাশ্মীর অঞ্চল, যা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধের কেন্দ্রবিন্দু, বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম স্পর্শকাতর ভূখণ্ড হিসেবে বিবেচিত। স্বাধীনতার পর দুই দেশ এই অঞ্চল নিয়ে তিনটি যুদ্ধ করেছে এবং এখনো কাশ্মীরকে নিজেদের অংশ হিসেবে দাবি করে। বর্তমান উত্তেজনা আবারও স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে, কাশ্মীর ইস্যু কেবল সীমান্তে নয়, বিশ্বব্যাপী বিমান চলাচলেও ছড়াতে পারে ভয়াবহ অভিঘাত।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মধ্যপ্রাচ্য, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্র এবং দক্ষিণ এশিয়ার উত্তপ্ত পরিস্থিতি বৈশ্বিক ফ্লাইট নিরাপত্তা ও খরচের উপর গুরুতর চাপ সৃষ্টি করছে।