বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: দক্ষিণ এশিয়ায় যুদ্ধাবস্থা ক্রমেই ঘনীভূত। ভারতীয় বিমান বাহিনী মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ছয়টি স্থানে বিমান হামলা চালিয়েছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, হামলার লক্ষ্য ছিল কাশ্মীরের আজাদ অংশে কোতলি, মুজাফফরাবাদ ও বাঘ জেলা এবং পাঞ্জাব প্রদেশের বাহাওয়ালপুর ও মুরিদকে এলাকা।
ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও হামলার কথা নিশ্চিত করেছে। এক বিবৃতিতে বলা হয়, “ভারত সীমিত পরিসরে সুনির্দিষ্ট সন্ত্রাসী অবকাঠামোর ওপর হামলা চালিয়েছে। অপারেশন ‘সিন্দুর’ নামের এই অভিযানে পাকিস্তানের নয়টি স্থান লক্ষ্যবস্তু ছিল।” যদিও বিবৃতিতে নির্দিষ্ট করে কোনো লক্ষ্যবস্তু বা ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ দেওয়া হয়নি।
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় হামলাকে “লজ্জাজনক” বলে আখ্যায়িত করেছেন। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে আলোচনায় ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল দাবি করেন, হামলাগুলো ছিল “নির্দিষ্ট, পরিমিত এবং উত্তেজনা বৃদ্ধিকারী নয়”।
অন্যদিকে, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ এক বিবৃতিতে বলেন, “ভারতের সঙ্গে সংঘর্ষ এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। আমরা প্রস্তুত আছি।”
“পাকিস্তানি বাহিনী ভারতীয় আগ্রাসনের যথাযথ জবাব দিচ্ছে,” এক সামরিক বিবৃতিতে বলা হয়েছে। এতে আরও জানানো হয়, অভিযানে অংশ নেওয়া সব পাকিস্তানি বিমান নিরাপদে ঘাঁটিতে ফিরে এসেছে।
পূর্ব পাঞ্জাব প্রদেশের প্রধান শহর রাওয়ালপিন্ডির প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তারা আকাশে একটি ক্ষেপণাস্ত্র দেখতে পান, যা পাকিস্তানি ভূখণ্ড থেকেই উৎক্ষেপণ করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)-এর মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী বুধবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, হামলায় আটজন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং আরও ৩৩ জন আহত হয়েছেন। তিনি বলেন, পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনী দ্রুত ও সমন্বিত প্রতিরক্ষা দিয়ে ভারতের এই আগ্রাসনের জবাব দিয়েছে।
পাকিস্তানি নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ হিসেবে পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে তিনটি রাফাল জেট, একটি মিগ-২৯ ও একটি সু-৩০ যুদ্ধবিমান। একইসঙ্গে পাকিস্তান বিমানবাহিনী একটি ভারতীয় হেরন ড্রোন গুলি করে নামিয়েছে বলেও নিশ্চিত করা হয়েছে।
সূত্রগুলো আরও জানায়, নিয়ন্ত্রণ রেখার বিভিন্ন স্থানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকটি পোস্ট ধ্বংস করা হয়েছে। এর পাশাপাশি দুধনিয়াল সেক্টরে এক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ভারতের ১২তম পদাতিক ব্রিগেডের সদর দপ্তর ধ্বংস করা হয়, যা ভারতের ১৫ কোরের অধীন ৯ম ডিভিশনের অংশ ছিল।
এই ঘটনায় একটি ভিডিও ফুটেজও প্রকাশ পেয়েছে, যেখানে ভারতীয় ব্রিগেড সদর দপ্তরের ধ্বংসাবশেষ দেখা গেছে। পাকিস্তানি সূত্রগুলো বলছে, “আমরা শুধু আত্মরক্ষা করছি। এই আগ্রাসনের পূর্ণ দায়ভার ভারতের।”
আজাদ কাশ্মীরের প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী আনোয়ারুল হক বলেন, “ভারত তার পুরোনো অভ্যাস মতোই রাতের অন্ধকারে কোতলি ও মুজাফফরাবাদে কাপুরুষোচিত হামলা চালিয়েছে। কোতলিতে এক নারী ও এক শিশু শহীদ হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “আল্লাহর ইচ্ছায়, পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয়ে আমরা এই আগ্রাসনের কঠোর জবাব দেব।”
এদিকে, পাকিস্তানি প্রতিরক্ষা বাহিনীর সব বিমান নিরাপদে ফিরে এসেছে বলে জানানো হয়েছে। পুরো অঞ্চলজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে, এবং যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কায় আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে।