আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মায়ানমারে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ড্রোণ হামলায় ধ্বংস হল আলফা (স্বাধীন)-এর একাধিক ঘাঁটি, এমনই দাবি করেছে সংগঠনটি। রবিবার সকালে এই হামলার কথা স্বীকার করে নেয় আলফা (আই)। সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, শনিবার গভীর রাতে একাধিক ড্রোণ ব্যবহার করে মায়ানমার সীমান্তের ওপারে আলফা (আই)-এর শিবির লক্ষ্য করে আক্রমণ চালানো হয়। হামলায় ব্যবহৃত ড্রোণগুলি ফ্রান্স এবং ইসরায়েলের তৈরি বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।
হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন আলফা (স্বাধীন)-এর নিম্ন পরিষদের সভাপতি নয়ন অসম। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৯ থেকে ২০ জন সদস্য। সংগঠনের দাবি, হামলার সময় তাদের ঘাঁটিগুলি কার্যত ধ্বংস হয়ে যায়। পুরো হামলা চলে রাতভর।
তবে সেনার তরফে এখনও পর্যন্ত এই হামলা নিয়ে কোনও মন্তব্য বা নিশ্চিতকরণ পাওয়া যায়নি। ভারতীয় সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহেন্দ্র রাওয়াত জানিয়েছেন, তাদের কাছে এ ধরনের কোনও অভিযানের তথ্য নেই।
আলফা (স্বাধীন) বা ULFA(I) দীর্ঘদিন ধরেই অসমের স্বাধীনতার দাবিতে সশস্ত্র আন্দোলন চালিয়ে আসছে। এর নেতৃত্বে রয়েছে পরেশ বরুয়া, যার অবস্থান মায়ানমার সীমান্ত এলাকায় বলে সন্দেহ করা হয়। সংগঠনটি অতীতেও একাধিকবার সেনা অভিযানের মুখে পড়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অভিযানের ধরন ও সময় নির্বাচন দেখে মনে করা হচ্ছে এটি ভারতের পূর্ববর্তী ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর ধাঁচে পরিচালিত হতে পারে। অপারেশন সিঁদুর ছিল পাকিস্তানের ভিতরে ঢুকে চালানো একাধিক আঘাতের পরিকল্পনা, যেখানে ভারতের মূল লক্ষ্য ছিল জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করা।
পূর্ব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে, বিশেষ করে উত্তর-পূর্ব ভারতে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের কার্যকলাপ এবং সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা ঝুঁকির প্রেক্ষিতে, এমন অভিযানের সম্ভাবনা পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
যদিও সরকারি স্বীকৃতি না থাকায় পুরো বিষয়টি ঘিরে তৈরি হয়েছে কূটনৈতিক স্তরের প্রশ্ন। মায়ানমারের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উপস্থিতি ভবিষ্যতেও আরও জটিল পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।