আন্তর্জাতিক ডেস্ক: জাপানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আঘাত হেনেছে ৭.৬ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প। ভূমিকম্পের পরপরই উপকূলীয় এলাকাগুলোতে সুনামির সতর্কতা জারি করেছে জাপানি কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় সময় অনুযায়ী আজ এই ভয়াবহ কম্পন অনুভূত হয়।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল উত্তর-পূর্ব জাপানের উপকূলীয় অঞ্চলের গভীরে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭.৬, যা অত্যন্ত শক্তিশালী হিসেবে বিবেচিত হয়। কম্পনের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে রাজধানী টোকিওতেও ভবনগুলো কেঁপে ওঠে।
ভূমিকম্পের পরপরই প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলবর্তী এলাকাগুলোতে বড় ধরনের জলোচ্ছ্বাস বা সুনামির আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপকূলীয় বাসিন্দাদের অবিলম্বে নিরাপদ এবং উঁচু স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভূমিকম্পের প্রভাবে সমুদ্রের ঢেউ ৩ থেকে ৫ মিটার পর্যন্ত উচ্চতায় পৌঁছাতে পারে। ফুকুশিমা, মিয়গি এবং ইওয়াতে প্রিফেকচারের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
এখন পর্যন্ত বড় ধরনের প্রাণহানির খবর পাওয়া না গেলেও, বেশ কিছু এলাকায় ঘরবাড়ি ধসে পড়ার এবং বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ফায়ার সার্ভিস এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধারকাজের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে একটি জরুরি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে নিয়মিত সতর্কবার্তা প্রচার করা হচ্ছে এবং সাইরেন বাজিয়ে মানুষকে সতর্ক করা হচ্ছে। রেল ও বুলেট ট্রেন (শিনকানসেন) পরিষেবা সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে।
জাপান ভৌগোলিকভাবে ‘রিং অফ ফায়ার’ বা আগ্নেয় মেখলার ওপর অবস্থিত হওয়ায় দেশটি অত্যন্ত ভূমিকম্পপ্রবণ। ২০১১ সালে এই উত্তর-পূর্বাঞ্চলেই ৯.০ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প ও সুনামিতে প্রায় ১৮,০০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন এবং ফুকুশিমা পারমাণবিক কেন্দ্রে বিপর্যয় ঘটেছিল। আজকের এই ৭.৬ মাত্রার ভূমিকম্প আবারো সেই ভয়াবহ স্মৃতির আতঙ্ক ফিরিয়ে এনেছে।
পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে জাপানের আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা । পরবর্তী আফটারশক বা পরাঘাত সম্পর্কেও নাগরিকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।










