Home সারাদেশ মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা

স্কুল ড্রেস পরে পালালেন সন্দেহভাজন গৃহকর্মী

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: রাজধানীর মোহাম্মদপুরে দিনে-দুপুরে নির্মম জোড়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। শাহজাহান রোডের একটি বহুতল ফ্ল্যাটে মা ও মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহতরা হলেন লায়লা আফরোজ (৪৮) এবং তার মেয়ে নাফিসা নাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫)। পুলিশ ধারণা করছে, চুরির উদ্দেশ্যে বাসায় ঢুকে নতুন নিয়োগ পাওয়া গৃহকর্মী এই নৃশংস ঘটনা ঘটিয়েছে।

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকালের দিকে মোহাম্মদপুর থানার শাহজাহান রোডের একটি বাড়ির সাততলায় এই ঘটনা ঘটে। হত্যার পর সন্দেহভাজন ওই গৃহকর্মী নিহত কিশোরীর স্কুল ড্রেস পরে পালিয়ে যান বলে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে।

রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার
নিহতদের পরিবারের প্রধান এ জেড আজিজুল ইসলাম পেশায় উত্তরা সানবিমস স্কুলের শিক্ষক। তিনি জানান, সকালে তিনি কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হন। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ফিরে এসে দেখেন বাসার দরজা খোলা। ভেতরে ঢুকে ড্রয়িং রুমে মেয়ের এবং ভেতরের শোবার ঘরে স্ত্রীর রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

নিহত নাফিসা মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। তাদের গ্রামের বাড়ি নাটোরে।

চার দিন আগের নিয়োগ ও সিসিটিভি রহস্য
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাত্র চার দিন আগে ভবনের দারোয়ানের মাধ্যমে ‘আয়েশা’ নামের এক নারীকে গৃহকর্মী হিসেবে কাজে নেওয়া হয়েছিল। হত্যাকাণ্ডের মূল সন্দেহভাজন হিসেবে পুলিশ তাকেই খুঁজছে।

ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে আয়েশা বোরকা পরে ওই ভবনে প্রবেশ করেন। প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা পর, সকাল ৯টা ৩৬ মিনিটে তিনি ভবন থেকে বের হন। তবে বের হওয়ার সময় তার পরনে বোরকা ছিল না; তিনি নিহত নাফিসার স্কুল ড্রেস পরা ছিলেন এবং মুখে মাস্ক ও কাঁধে ব্যাগ ছিল। নিজের পরিচয় লুকাতে এবং নিরাপদে পালাতে তিনি এই ছদ্মবেশ ধারণ করেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পুলিশ যা বলছে
মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা দুটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। বাসাটি তছনছ অবস্থায় পাওয়া গেছে, যা থেকে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে লুটপাটের উদ্দেশ্যেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।

তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) জানান, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হতে পারে। সন্দেহভাজন গৃহকর্মী পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে নেমেছে। ভবনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং দারোয়ানের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এ ঘটনায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এবং স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।