Home আন্তর্জাতিক তেল আবিবে ইরানের নজিরবিহীন হামলা: মোসাদ কার্যালয়ে ৩৬ লাশের স্তূপ

তেল আবিবে ইরানের নজিরবিহীন হামলা: মোসাদ কার্যালয়ে ৩৬ লাশের স্তূপ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসরায়েলের কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টিত তেল আবিবের গ্লিলট (Glilot) এলাকায় অবস্থিত ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের (Mossad) সদর দপ্তরে ইরানের নজিরবিহীন হামলায় অন্তত ৩৬ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে মোসাদের বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা কর্মী রয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। এই ঘটনার পর মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং বড় ধরনের যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

হামলার বিবরণ
সামরিক সূত্র ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ইরান এই হামলায় তাদের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক মিসাইল ব্যবহার করেছে। ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘আয়রন ডোম’ এবং ‘অ্যারো’ সিস্টেম ভেদ করে বেশ কয়েকটি মিসাইল সরাসরি মোসাদের সদর দপ্তরে আঘাত হানে। হামলায় ভবনটির একটি বড় অংশ ধসে পড়েছে এবং ব্যাপক কাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে।

হামলার সময় মোসাদ সদর দপ্তরে একটি জরুরি বৈঠক চলছিল বলে অসমর্থিত সূত্রে জানা গেছে। আকস্মিক এই হামলায় ৩৬ জন নিহত হওয়ার পাশাপাশি আরও অর্ধশতাধিক ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়েছেন।

ইরানের দাবি
ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস  এক বিবৃতিতে এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। তেহরান জানিয়েছে, তাদের শীর্ষ কমান্ডারদের হত্যার প্রতিশোধ এবং ফিলিস্তিন ও লেবাননে ইসরায়েলি আগ্রাসনের জবাব হিসেবে এই ‘অপারেশন’ চালানো হয়েছে। ইরানের দাবি, তারা সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতেই মোসাদের হেডকোয়ার্টার্স লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে এবং এটি তাদের ‘সফলতম’ অভিযানগুলোর একটি।

ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী প্রথমে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করলেও পরবর্তীতে বড় ধরনের হতাহতের বিষয়টি আন্তর্জাতিক মহলে ছড়িয়ে পড়ে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী এই হামলাকে ‘লাল রেখা’ অতিক্রম করা হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “ইরানকে এই ভুলের জন্য চড়া মূল্য দিতে হবে। আমরা আমাদের সময় ও সুযোগ মতো এর কঠোর জবাব দেব।”

বিশ্লেষকদের মতামত
নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, মোসাদের সদর দপ্তরের মতো সুরক্ষিত জায়গায় এত বড় হামলা এবং প্রাণহানি ইসরায়েলের গোয়েন্দা ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য একটি বড় ধাক্কা। ৩৬ জন নিহতের ঘটনাটি দুই দেশের সংঘাতকে একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে এবং দুপক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। অন্যদিকে, মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিরোধ কামী গোষ্ঠীগুলো এই হামলাকে ‘ঐতিহাসিক বিজয়’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

বর্তমান পরিস্থিতি
তেল আবিবজুড়ে বর্তমানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। হামলার পর থেকেই ওই এলাকাটি সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। উদ্ধারকাজ এখনো চলছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে, ইসরায়েলের সম্ভাব্য পাল্টা হামলার আশঙ্কায় ইরানেও সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।