পর্ব-এক
ইউই হোশিকো, টোকিও: জাপানের ইউজড বা রিকন্ডিশন্ড গাড়ি বিশ্ববাজারে একটি বিশেষ স্থান দখল করেছে। উন্নত প্রযুক্তি, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ এবং মানসম্মত নির্মাণের কারণে জাপানি গাড়ি অনেক দেশেই অতি-প্রিয়। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের বাজারে জাপানি রিকন্ডিশন্ড গাড়ির চাহিদা অত্যন্ত বেশি।
কোথা থেকে আসে গাড়িগুলো?
জাপানে ব্যক্তিগত ও কর্পোরেট মালিকরা প্রায় ৩–৫ বছরের মধ্যে গাড়ি পরিবর্তন করে। কঠোর গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ এবং নির্গমন নীতিমালার কারণে পুরনো গাড়ি নতুনের মতো অবস্থায় থাকে। এই গাড়িগুলো নিলাম কেন্দ্রগুলোতে আসে, যেখানে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা যেমন USS, JU, TAA, HAA, CAA গাড়িগুলো নিলামে তুলে দেয়।
নিলামের প্রক্রিয়া ও মান যাচাই
প্রতিটি গাড়ি বিস্তারিত পরিদর্শনের মাধ্যমে গ্রেডিং রিপোর্ট পায়। এই রিপোর্টে গাড়ির বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ অবস্থা, মাইলেজ, দুর্ঘটনার ইতিহাস ইত্যাদি উল্লেখ থাকে। বিদেশি ক্রেতারা অনলাইনের মাধ্যমে নিলামে অংশ নিতে পারেন।
বিশ্ববাজারে রপ্তানি
নিলাম থেকে ক্রেতার কাছে গাড়ি পৌঁছানোর পর রিকন্ডিশনিং করা হয়। এতে স্ক্র্যাচ মেরামত, যন্ত্রাংশ পরিবর্তন, পরিষ্কার করা ও ইন্সপেকশন অন্তর্ভুক্ত। এরপর গাড়ি রপ্তানি করা হয় সমুদ্রপথে—Ro-Ro জাহাজে চালিয়ে তোলা বা কন্টেইনারে প্যাক করে পাঠানো হয়। প্রতি বছর জাপান থেকে প্রায় ১.৫–২ মিলিয়ন গাড়ি রপ্তানি করা হয়।
বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা
জাপানি রিকন্ডিশন্ড গাড়ি সারা বিশ্বের বাজারে আস্থা ও স্থায়িত্বের প্রতীক। গুণগত মান, সহজ সার্ভিসিং এবং তুলনামূলক কম দামের কারণে এগুলো বহু দেশে প্রাধান্য পায়। বাংলাদেশে Toyota, Honda, Nissan, Mazda, Mitsubishi ব্র্যান্ডের গাড়ি সবচেয়ে বেশি আমদানি হয়।
জাপানের রিকন্ডিশন্ড গাড়ি শিল্প একটি সুসংগঠিত ও স্বচ্ছ ব্যবস্থা। কঠোর নিলাম, মান যাচাই, রিকন্ডিশনিং এবং দক্ষ রপ্তানি ব্যবস্থার কারণে এগুলো বিশ্ববাজারে ভালো অবস্থান ধরে রেখেছে। বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে এই গাড়িগুলো ক্রেতাদের মধ্যে স্থায়িত্ব ও আস্থার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।










