Home আন্তর্জাতিক “সন্দেহ হলেই মৃত্যু? ওডিশায় বাঙালি খুনে কাঠগড়ায় ভারতে সংখ্যালঘু নিরাপত্তা

“সন্দেহ হলেই মৃত্যু? ওডিশায় বাঙালি খুনে কাঠগড়ায় ভারতে সংখ্যালঘু নিরাপত্তা

কৃষ্ণা বসু, কলকাতা: ওডিশায় বাংলাদেশি সন্দেহে পশ্চিমবঙ্গের এক বাঙালি মুসলিম যুবককে গণপিটুনি দিয়ে হত্যার ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জাতীয় রাজনীতিতে। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সরব হয়েছে মেহবুবা মুফতির দল পিডিপি।

ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে মেহবুবা-কন্যা ইলতিজা মুফতি ভারতকে ‘লিঞ্চিস্থান’ বলে অভিহিত করেছেন, যা নিয়ে বর্তমানে রাজনৈতিক মহলে বিতর্কের ঝড় উঠেছে।

সম্প্রতি ওডিশায় একদল উন্মত্ত জনতা ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ সন্দেহে এক যুবককে বেধড়ক মারধর করে। গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তদন্তে জানা যায়, মৃত যুবকের নাম আব্দুল রহমান, তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বাসিন্দা। কাজের সন্ধানে তিনি ওডিশায় গিয়েছিলেন। এই ঘটনা জানাজানি হতেই দেশজুড়ে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ও নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

এই ঘটনার পর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘এক্স’-এ ক্ষোভ উগরে দেন পিডিপি নেত্রী ইলতিজা মুফতি। তিনি অভিযোগ করেন, ভারতে সংখ্যালঘুরা আর নিরাপদ নয় এবং প্রতিদিন দেশের কোথাও না কোথাও মুসলিমদের ওপর হামলা হচ্ছে। ইলতিজা আরও দাবি করেন, বিজেপি সরকারের আমলে অপরাধীরা আইনের তোয়াক্কা করছে না, কারণ তারা জানে তাদের পেছনে রাজনৈতিক সমর্থন রয়েছে। গান্ধী-নেহরুর ভারতের আদর্শ নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি একে ‘লিঞ্চিস্থান’ বলে কটাক্ষ করেন।

ইলতিজার এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওডিশার এই ঘটনাটি একটি বিচ্ছিন্ন অপরাধমূলক কাজ এবং এর সাথে রাজনীতির কোনো যোগ নেই। পিডিপি এই দুঃখজনক ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক রঙ দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে বলেও তারা অভিযোগ করেন। ওডিশা সরকার ও পুলিশ প্রশাসন অবশ্য দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আশ্বাস দিয়েছে।

ইলতিজার ‘লিঞ্চিস্থান’ মন্তব্যটি ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। নেটিজেনদের একাংশ মনে করছেন, বারবার গণপিটুনির ঘটনা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে এবং এর বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োজন। অন্য অংশ মনে করছেন, একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা দেশকে এভাবে আক্রমণ করা অনুচিত।

তবে কারণ যাই হোক, মুর্শিদাবাদের যুবকের এই মৃত্যু আবারও দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে সংখ্যালঘু নিরাপত্তা এবং গণপিটুনি বিরোধী আইনের প্রয়োজনীয়তার বিতর্ককে জোরালো করল।