Home সারাদেশ  মেঘনায় ধরা পড়ল ৩০ কেজির ৩ শাপলাপাতা মাছ

 মেঘনায় ধরা পড়ল ৩০ কেজির ৩ শাপলাপাতা মাছ

ছবি: সংগৃহীত

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, নোয়াখালী: হাতিয়া উপজেলার মেঘনা নদীতে জেলেদের জালে ধরা পড়েছে ৩০ কেজি ওজনের তিনটি শাপলাপাতা মাছ। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার হরণী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ঘাটে মাছগুলো আনা হলে একনজর দেখতে ভিড় জমান স্থানীয়রা। পরে নিলামের মাধ্যমে মাছগুলো ১২ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভোলা জেলার জেলে দেলোয়ার হোসেন মেঘনা নদী সংলগ্ন সাগরে জাল ফেললে অন্যান্য মাছের সঙ্গে এই তিনটি শাপলাপাতা মাছ উঠে আসে। মাছগুলো চেয়ারম্যান ঘাটের মৎস্য আড়তে তোলা হলে নিলামে প্রতি কেজি ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হয়। সেই হিসেবে ৩০ কেজি ওজনের মাছগুলোর মোট দাম দাঁড়ায় ১২ হাজার টাকা।

চেয়ারম্যান ঘাটের আড়তদার নুর হোসেন জানান, স্থানীয় বাজারে এই মাছের ক্রেতা ও চাহিদা কম থাকায় মাছগুলো ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

নোয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, “বিরল প্রজাতির এই সামুদ্রিক মাছটি স্থানীয়ভাবে ‘হাউস মাছ’ বা ‘শাপলাপাতা’ নামে পরিচিত। তবে এর প্রকৃত নাম ‘রে ফিন ফিশ’ বা ‘স্টিং ফিশ’। সাধারণত গভীর সমুদ্রে এদের বাস। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এলাকায় এদের বেশি দেখা গেলেও নোয়াখালীর উপকূলে এরা কিছুটা কম ধরা পড়ে।”

সাম্প্রতিক সময়ে আরও যেখানে মিলেছে শাপলাপাতা মাছ

নদ-নদীতে পানি ও আবহাওয়ার পরিবর্তনের ফলে সাম্প্রতিক সময়ে সাগরের এই মাছটি উপকূলীয় নদীগুলোতেও প্রায়ই ধরা পড়ছে। গত কয়েক মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে বড় আকারের শাপলাপাতা মাছ পাওয়ার খবর পাওয়া গেছে:

১. রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া (পদ্মা নদী): কিছুদিন আগেই রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাটে পদ্মা নদীতে জেলের জালে বিশাল আকৃতির একাধিক শাপলাপাতা মাছ ধরা পড়ার খবর মিলেছিল। সেখানে প্রায় ২ থেকে ৩ মণ ওজনের মাছও পাওয়া গেছে।

২. পটুয়াখালীর কুয়াকাটা ও গলাচিপা: উপকূলীয় এলাকা হওয়ায় পটুয়াখালীর গলাচিপা ও কুয়াকাটা সংলগ্ন সাগরে এবং নদীতে প্রায়ই জেলেদের জালে বড় আকারের শাপলাপাতা মাছ ধরা পড়ে।

৩. ভোলার তেঁতুলিয়া ও মেঘনা: ভোলা জেলার চরফ্যাশন ও সংলগ্ন তেঁতুলিয়া নদীতেও গত মাসে জেলের জালে মণকে মণ ওজনের শাপলাপাতা মাছ ধরা পড়ার ঘটনা ঘটেছে।

৪. বাগেরহাট ও সুন্দরবন সংলগ্ন নদ-নদী: সুন্দরবন সংলগ্ন দুবলার চর ও পশুর নদেও মাঝেমধ্যে এই মাছ জেলেদের জালে আটকা পড়ে।

মৎস্য বিশেষজ্ঞদের মতে, শাপলাপাতা মাছ সাধারণত সমুদ্রের তলদেশে বিচরণ করে। তবে খাদ্যের সন্ধানে বা প্রজনন ঋতুতে এরা অনেক সময় নদীর মোহনায় চলে আসে। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন অনুযায়ী এই মাছের বেশ কিছু প্রজাতি বিলুপ্তপ্রায় এবং শিকার নিষিদ্ধ হলেও সচেতনতার অভাবে জেলেরা প্রায়ই এগুলো ধরে বিক্রি করছেন।