বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, রাজস্থলী: “বাবা, তুমি কবে আসবা?” শেষবার ফোনে এই প্রশ্নই করেছিল ছোট্ট উক্য চিং মারমা। মা-বাবা থেকে বহু দূরে ঢাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের হোস্টেলে থাকা এই স্কুল ছাত্রটি তখনও জানত না, তার অপেক্ষার দিন ফুরিয়ে আসছে।
মাত্র ১২ বছর বয়সে পড়াশোনার স্বপ্ন নিয়ে রাঙামাটির রাজস্থলী থেকে রাজধানীতে গিয়েছিল উক্য। পড়ত ক্লাস সেভেনে। স্বপ্ন ছিল বড় কিছু হওয়ার, তাই মা-বাবাও ত্যাগ করেছিলেন নিজ শহর, পাড়ি জমিয়েছিলেন বান্দরবানে। ছেলেকে ঢাকায় রেখে আবার ফিরে যান রাজস্থলীতে—মাথায় শুধু একটাই ভাবনা, সন্তানের ভবিষ্যৎ যেন উজ্জ্বল হয়।
কিন্তু সব থেমে গেল এক ভয়াবহ দুর্ঘটনায়।
গতকাল সোমবার ঢাকার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে যে ৩১ জনের প্রাণহানি ঘটে, তাদের একজন উক্য চিং মারমা। খবর পেয়ে ছুটে যান তার বাবা উসাইমং মারমা। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর গভীর রাতে হাসপাতাল থেকে জানানো হয়—“আপনার ছেলে আর নেই।”
উক্য ছিল উসাইমং দম্পতির একমাত্র সন্তান। সন্তানের লাশ হাতে পাওয়ার পর তাঁর চোখের ভাষায় ফুটে ওঠে এক অপার শূন্যতা। কাঁপা কণ্ঠে বলেন, “ছেলের পড়াশোনার জন্য আমরা সবকিছু ছাড়তে পারি, কিন্তু কে জানত, আমাদের এই ছাড় দেওয়ার শেষ ফল হবে তার লাশ নেওয়া?”
হোস্টেলে মোবাইল ফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ফাঁক পেলেই বাবাকে মিসড কল দিত উক্য। শেষ দিনে আর কথা হয়নি, কারণ তখন বাবা-ছেলে দুজনেই স্কুলের তাড়ায় ছিলেন। সেই শেষ না বলা কথার ভার আজ ভেঙে দিচ্ছে পরিবারটিকে।
ছেলের জন্য এবার ঢাকায় এসে একটি ট্রলি ব্যাগ কিনে দেওয়ার কথা ছিল উসাইমংয়ের। কিন্তু সেই ব্যাগ আর দেওয়া হলো না। এখন শুধু বাকরুদ্ধ মা আর নিঃস্ব বাবা অপেক্ষা করছেন—ছেলেকে নিয়ে চিরবিদায়ের জন্য রাজস্থলীর বাঙ্গালহালিয়ার নিজ গ্রামে।
উসাইমং বললেন, “সরকার ক্ষতিপূরণ দিতে পারে। কিন্তু আমার ছেলে কি আর ফিরে আসবে?”
এই একটি প্রশ্ন যেন দেশের প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে নাড়া দেয়।
👉 এই হৃদয়বিদারক কাহিনি ছড়িয়ে দিন, যাতে শিশুদের নিরাপত্তা, হোস্টেলের নজরদারি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দায়িত্বশীলতা নিয়ে সমাজ আরও সংবেদনশীল হয়।
📢 শেয়ার করুন, যেন আর কোনো বাবা-মা এমন খবর শুনে সন্তানকে হারানোর ভয় না পান।
🕊️ উক্য চিং মারমার আত্মার শান্তি কামনা করছি।