Home আন্তর্জাতিক মা-বাবার ঋণের দায়ে বন্ধক শিশুপুত্র, ফেরত এল লাশ হয়ে

মা-বাবার ঋণের দায়ে বন্ধক শিশুপুত্র, ফেরত এল লাশ হয়ে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

তামুলনাড়ু:এক আদিবাসী দম্পতির জীবনে ঋণের বোঝা এতটাই ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে, তা কল্পনাও করতে পারেননি তাঁরা। মাত্র ২৫ হাজার টাকার ঋণ শোধ করতে না পারায় তাঁদের এক শিশুপুত্রকে বন্ধক রাখতে বাধ্য হন তাঁরা। অভিযোগ, এরপরই সেই শিশুটিকে নির্মমভাবে হত্যা করে মাটিতে পুঁতে দেয় খামারমালিক। হৃদয়বিদারক এই ঘটনাটি ঘটেছে অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতিতে। ইতিমধ্যে অভিযুক্ত খামারমালিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সূত্র জানায়, ওই আদিবাসী দম্পতি দীর্ঘদিন ধরে সন্তানসহ একটি খামারে শ্রমিকের কাজ করতেন। তাঁদের সঙ্গে তিনটি ছোট ছেলেমেয়ে ছিল। তবে খামারের কঠিন পরিশ্রম, উপযুক্ত পারিশ্রমিকের অভাব এবং অবর্ণনীয় কষ্টের কারণে শেষ পর্যন্ত চাকরি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। কিন্তু খামারের মালিক জানিয়ে দেয়, ঋণ শোধ না করে কাজ ছাড়ার অনুমতি দেওয়া হবে না। শুধু তাই নয়, সুদসহ সেই ঋণের পরিমাণ ৪৫ হাজার টাকা দাঁড়িয়েছে বলেও দাবি করে মালিক।

দম্পতি অনুরোধ করেন, সময়মতো তাঁরা ঋণের টাকা শোধ করবেন। কিন্তু মালিক অনড় থাকে। তখন এক ভয়াবহ শর্ত জুড়ে দেয় সে—ঋণের গ্যারান্টি হিসেবে তাঁদের এক শিশুপুত্রকে রেখে যেতে হবে খামারে। সন্তানকে নিয়ে দীর্ঘ টানাপোড়েন শেষে নিরুপায় হয়ে তাঁরা ছেলেকে মালিকের হেফাজতে রেখে যান।

কয়েক সপ্তাহ পর টাকা নিয়ে এসে সন্তানকে ফেরত চান ওই দম্পতি। কিন্তু মালিক জানান, শিশুটি নাকি খামার থেকে পালিয়ে গিয়েছে। সন্তানের খোঁজ না পেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন তাঁরা। তদন্তে নামে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে শেষমেশ মালিক স্বীকার করেন, শিশুটি জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে এবং কাউকে কিছু না জানিয়েই তার দেহ মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে।

তবে শিশুটির পরিবার এই ব্যাখ্যায় বিশ্বাস রাখতে পারেনি। তাঁদের দাবি, সন্তানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশের আরও জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। পরে তামিলনাড়ুর কাঞ্চিপুরম এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় শিশুটির মরদেহ।

শিশুটিকে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ওই খামারমালিককে। তদন্ত এখনও চলছে। আর আদিবাসী দম্পতি আজও ছেলের শূন্যতা বুকে নিয়ে শোকের ভার বইছেন। মাত্র কয়েক হাজার টাকার ঋণ যেন কেড়ে নিল তাঁদের গোটা পৃথিবী।


এই ঘটনার প্রতিটি পংক্তি কাঁদিয়ে তোলে, চিনিয়ে দেয় সমাজে কতটা নির্মমতা এখনো বেঁচে আছে। এক শিশুর জীবন, এক পরিবারে শোক—সবকিছুর পেছনে মাত্র কয়েক হাজার টাকার ঋণ!

👉 আপনি কী মনে করেন, এই খামারমালিকের সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া উচিত নয়?
আপনার মতামত আমাদের জানাতে নিচে কমেন্ট করুন।
এই ঘটনাকে সবাই জানুক—তবেই সচেতনতা বাড়বে, তবেই অন্যায় থামবে।
শেয়ার করুন, কমেন্ট করুন, প্রতিবাদে শামিল হোন।