দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন শেখ আলফু মিয়া (৪১), শেখ পংকী মিয়া (৪৩), শেখ তোতা মিয়া (৫৭), শেখ আব্দুর রব ওরফে লেবু মিয়া (৬৩), পংকীর স্ত্রী লাভলী বেগম, লেবু মিয়ার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (৪৮), ফখর উদ্দিন ওরফে অহর (৪৬) এবং হেলাল উদ্দিন ওরফে দিপু মিয়া (৪৩)। এদের মধ্যে দিপু মিয়া পলাতক থাকায় রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। বাকিরা সবাই উপস্থিত ছিলেন।
নিহত শেখ মাসুক মিয়া ওসমানীনগর উপজেলার ফতেহপুর গুপ্তপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং মৃত শেখ মদরিছ আলীর ছেলে। আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. সোহেল রানা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ১৩ জুন বিকেলে মাসুক মিয়া গোয়ালাবাজারের উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন। সেদিন রাতে তিনি আর ফিরে আসেননি। ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তার স্ত্রী যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হন। পরদিন সকালে দাসপাড়ায় গফুর মিয়ার বাড়ির পাশে ধানক্ষেতে মাসুকের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। পরিচয় শনাক্তের জন্য মাইকিং করা হলে নিহতের ভাই শেখ আলফু ও তোতা মিয়া এসে মরদেহ শনাক্ত করেন।
প্রাথমিকভাবে আলফু মিয়া অজ্ঞাতপরিচয়ে একটি মামলা দায়ের করলেও তদন্তে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মাসুকের ভাই আলফু, পংকী ও তোতার সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। এরপর ওসমানীনগর থানার তৎকালীন ওসি এসএম মাঈন উদ্দিন তাদের আটক করেন। পরে এসআই মমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে নতুন করে একটি হত্যা মামলা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আল আসলাম মুমিন জানান, প্রবাসে থাকাকালীন মাসুক তার ভাইদের কাছে টাকা পাঠাতেন। সেই টাকায় ভাইয়েরা নিজেদের নামে জমি কিনে নেন। দেশে ফিরে মাসুক জমির দলিল নিজের নামে করে দিতে বললে শুরু হয় দ্বন্দ্ব। জমির মালিকানা নিয়ে দীর্ঘদিনের এই বিরোধই শেষ পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডে রূপ নেয়। পরিকল্পনা করে চার ভাই এবং দুই ভাবিসহ আটজন মিলে মাসুককে হত্যা করেন।
আদালতের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপক্ষ, তবে আসামিপক্ষ উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানিয়েছে।