আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা স্বর্ণের নিরাপদ বিনিয়োগ-আকর্ষণ হ্রাস করেছে। ফলে মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম ২ শতাংশের মতো কমে দুই সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছায়।
মার্কিন সময় মঙ্গলবার বিকেল ১টা ৪৬ মিনিটে স্পট গোল্ড প্রতি আউন্স ৩,৩১৯ দশমিক ৯৬ ডলারে লেনদেন হয়, যা আগের দিনের তুলনায় ১ দশমিক ৪ শতাংশ কম। এর কিছু সময় আগেই স্বর্ণের দাম ২ শতাংশের বেশি পড়ে গিয়ে ৯ জুনের পর সর্বনিম্নে পৌঁছে যায়। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে স্বর্ণের ফিউচার মূল্য ১ দশমিক ৮ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ৩,৩৩৩ দশমিক ৯ ডলারে।
জ্যানার মেটালস-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সিনিয়র বিশ্লেষক পিটার গ্রান্ট বলেন, “মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা প্রশমিত হওয়াই স্বর্ণবাজারে পতনের মূল কারণ। নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণের চাহিদা হ্রাস পেয়েছে, বিনিয়োগকারীরা এখন ঝুঁকি নিতে আগ্রহী।”
তবে তিনি জানান, স্বর্ণের ক্ষেত্রে এখন শক্তিশালী সহায়ক সীমা রয়েছে ৩,৩০০ ডলার এবং এরপর ৩,২৫০ ডলারের ঘরে।
ইরান ও ইসরায়েল ১২ দিনের সংঘাতের পর যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলে বিশ্ববাজারে স্থিতি ফিরে আসে। এর প্রভাবে শুধু স্বর্ণ নয়, শেয়ারবাজারও ঊর্ধ্বমুখী হয় এবং ডলারের দর কিছুটা কমে।
যদিও ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ মঙ্গলবার জানান, তেহরানে নতুন করে হামলার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি—যেটি যুদ্ধবিরতির ‘স্পষ্ট লঙ্ঘন’ হিসেবে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাব। ফলে বাজারে এখনও এক ধরনের অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে।
পিটার গ্রান্ট বলেন, “এই যুদ্ধবিরতি কতটা স্থায়ী হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তাই স্বর্ণের দামের পতন আপাতত সীমিতই থাকবে বলে মনে হচ্ছে।”
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল কংগ্রেসের জন্য প্রস্তুতকৃত বক্তব্যে বলেন, শুল্ক বৃদ্ধির কারণে মূল্যস্ফীতি কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়, তা পর্যবেক্ষণ করতে আরও সময় প্রয়োজন—এবং এর আগে সুদের হার কমানো সম্ভব নয়।
তবে বাজারে প্রত্যাশা রয়েছে, চলতি বছরের অক্টোবর থেকে শুরু করে ডিসেম্বরের মধ্যে ফেড ৫০ বেসিস পয়েন্ট পর্যন্ত সুদের হার কমাতে পারে। উল্লেখ্য, স্বর্ণ সুদের হারহীন সম্পদ হওয়ায় কম সুদের পরিবেশে এর চাহিদা বাড়ে।
এদিন স্পট সিলভারের দামও ০.৮ শতাংশ কমে দাঁড়ায় প্রতি আউন্স ৩৫ দশমিক ৮৩ ডলারে, যা ৫ জুনের পর সর্বনিম্ন। অপরদিকে প্লাটিনামের দাম ১.৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ১,৩১৪ ডলার, আর প্যালাডিয়ামের দাম ১.৫ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ১,০৬১ ডলার।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের স্টক মার্কেট চাঙ্গা হয়ে ওঠে। ডাও ও এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ১ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পায়, এবং ন্যাসডাক সূচক প্রায় দেড় শতাংশ পর্যন্ত উন্নীত হয়।