বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের মূল চাবিকাঠি হলো বর্তমান সংবিধানের আওতায় নির্বাচন আয়োজন করে জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া— এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
শনিবার রাজধানীর মৌচাকের কসমস সেন্টারে ‘সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) ব্যবস্থা : নির্বাচন ও সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গি’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে কসমস ফাউন্ডেশন ও ইউনাইটেড নিউজ অব বাংলাদেশ (ইউএনবি)।
আমীর খসরু বলেন, “বর্তমান সংবিধান মেনে নির্বাচন করলেই গণতান্ত্রিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব, আর সেখান থেকেই শুরু হবে প্রকৃত জনমতের রাজনীতি।”
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সব রাজনৈতিক দলের মধ্যে শতভাগ ঐকমত্য সম্ভব নয়। তাই এই সিদ্ধান্ত জনগণের ওপর ছেড়ে দিতে হবে। জনগণই ঠিক করবে কোন পদ্ধতি দেশের জন্য ভালো।”
তিনি আরও বলেন, “গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভেতর দিয়েই আমাদের সংস্কার আনতে হবে। জনগণের সঙ্গে আলোচনা, মতবিনিময় ও সংলাপের মাধ্যমেই সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হবে। যদি গণতন্ত্রে বিশ্বাস থাকে, তবে জনগণকেই হতে হবে এর কেন্দ্রবিন্দু।”
গণতান্ত্রিক শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠার গুরুত্ব উল্লেখ করে খসরু বলেন, “আমরা যদি পরিবর্তন চাই, তবে প্রথমে নির্বাচনের মাধ্যমে বৈধ সরকারের অধীনে গণতান্ত্রিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। এরপর ধীরে ধীরে প্রয়োজনীয় সংস্কার ও পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে।”
সংলাপ ও ভিন্নমত গ্রহণের সংস্কৃতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে হবে। সহনশীলতা বাড়াতে হবে এবং ভিন্ন মতকে শ্রদ্ধা করতে হবে। সংঘাতপূর্ণ রাজনীতির মধ্য দিয়ে কখনোই গণতন্ত্র বিকশিত হতে পারে না।”
একই অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, “যদি আমরা ব্যক্তিগত বা গোষ্ঠীগত স্বার্থে সিদ্ধান্ত নিতে থাকি, তবে তা আগের ফ্যাসিস্ট সরকারের পথেই নিয়ে যাবে। গণতন্ত্র মানে মতের স্বাধীনতা, সমঝোতা ও জনগণের অংশগ্রহণ।”
পিআর পদ্ধতি নিয়ে তিনি আরও বলেন, “কিছু রাজনৈতিক দল সংসদে অতিরিক্ত আসনের আশায় এ ব্যবস্থা চাচ্ছে। কিন্তু গণতান্ত্রিক সংস্কার কেবল আসনের হিসাব নয়, বরং এটি জনগণের অংশগ্রহণ ও দায়বদ্ধতার প্রতীক হওয়া উচিত।”
তিনি আহ্বান জানান, “চলুন, সবাই ঐক্যবদ্ধ হই, দেশের স্বার্থে একটি স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তুলি।”