আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
চীনের মহাকাশ গবেষণায় নতুন মাইলফলক যোগ হলো। দেশটির প্রথম গ্রহাণু অনুসন্ধান ও নমুনা সংগ্রহ মিশন ‘তিয়ানওয়েন-২’ সফলভাবে উৎক্ষেপণ হয়েছে বৃহস্পতিবার ভোরে। সিচুয়ান প্রদেশের শিচ্যাং স্যাটেলাইট লঞ্চ সেন্টার থেকে লং মার্চ-৩বি বাহক রকেটের মাধ্যমে এ অভিযান শুরু হয়।
প্রায় ১৮ মিনিটের উৎক্ষেপণ পর্ব শেষে ‘তিয়ানওয়েন-২’ তার সৌর প্যানেল মেলেছে এবং পূর্বনির্ধারিত কক্ষপথে সফলভাবে প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছে চায়না ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (সিএনএসএ)। চীনের মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসে এটিই দ্রুততম প্রোব, যার গতি দ্বিতীয় মহাজাগতিক বেগ ১১.২ কিলোমিটার প্রতি সেকেন্ড অতিক্রম করেছে, যা পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ থেকে মুক্ত হতে প্রয়োজন।
সিএসটিসির মুখপাত্র ওয়েই ইউয়ানমিং বলেন, “তিয়ানওয়েন-২ উৎক্ষেপণের সময় গতি নিয়ন্ত্রণের যে জটিলতা ছিল, তা যেন বেইজিং থেকে শাংহাইয়ে একটি ঝুলন্ত বাস্কেটবল হুপে নিখুঁতভাবে বল ছোড়া এতটাই সূক্ষ্মতা প্রয়োজন।”

গ্রহাণু ২০১৬এইচও৩ এবং প্রধান বেল্টের ধূমকেতু ৩১১পি অনুসন্ধান এই মিশনের দুটি প্রধান লক্ষ্য। গবেষকরা বলেন, এই গ্রহাণুগুলো প্রায় ৪.৫ বিলিয়ন বছর আগে সৌরজগতের শুরুর সময় গঠিত হয়েছিল এবং এখনো প্রায় অপরিবর্তিত আছে। ফলে এগুলোকে সৌরজগতের জীবন্ত জীবাশ্ম হিসেবে ধরা হয়। এদের মধ্য দিয়ে পৃথিবীর জল, জৈব পদার্থ ও বিবর্তনের রহস্য উন্মোচনের আশা করছেন বিজ্ঞানীরা।
চীনা মহাকাশ প্রকৌশলী চেন ছুনলিয়াং জানান, ২০১৬এইচও৩ একটি নিখুঁত সময়-স্মৃতিচিহ্ন, আর ৩১১পি একইসঙ্গে গ্রহাণু ও ধূমকেতুর বৈশিষ্ট্য বহন করে, যা এ গবেষণার গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
তিয়ানওয়েন-২ অভিযানে তিনটি আলাদা নমুনা সংগ্রহ পদ্ধতি রাখা হয়েছে স্পর্শ করে নমুনা সংগ্রহ , স্থিতি অবস্থান থেকে নমুনা নেয়া এবং সংযুক্ত থেকে সংগ্রহ । তবে চূড়ান্ত পদ্ধতি নির্ধারণ করা হবে গ্রহাণুর ভূপৃষ্ঠের পরিস্থিতি অনুযায়ী।
২০২৭ সালে প্রোবটির ক্যাপসুল পৃথিবীতে নমুনা ফিরিয়ে আনবে বলে আশা করা হচ্ছে, এরপর এটি মঙ্গল ও বৃহস্পতির মধ্যবর্তী প্রধান গ্রহাণু বেল্টে অবস্থিত ৩১১পি ধূমকেতুর দিকে যাত্রা করবে। সিএনএসএ আশা করছে, ২০৩৪ সালের মধ্যে সে গবেষণাও শুরু হবে।
চীনের ‘তিয়ানওয়েন’ মিশনের নাম এসেছে প্রাচীন কবি ছুই ইউয়ানের রচিত বিখ্যাত কবিতা ‘তিয়ানওয়েন’ বা ‘স্বর্গকে প্রশ্ন’ থেকে। এর আগেও ২০২০ সালে চীন তিয়ানওয়েন-১ মঙ্গলের উদ্দেশ্যে পাঠায় এবং সফলভাবে তা কক্ষপথে প্রবেশ, অবতরণ এবং রোভার মোতায়েন করতে সক্ষম হয়।
📢 চীনের মহাকাশ গবেষণায় নতুন অধ্যায়!
তিয়ানওয়েন-২ মিশনের এই সাফল্য সম্পর্কে আপনার কী মত? মহাকাশবিজ্ঞানের এই নতুন অভিযানের ভবিষ্যৎ কীভাবে বদলে দেবে আমাদের জ্ঞানভান্ডার?
📌 আপনার মতামত জানাতে কমেন্ট করুন এবং প্রতিবেদনটি শেয়ার করে অন্যদের জানার সুযোগ করে দিন।
🌍 বিজ্ঞানের এই চমৎকার সাফল্যের খবর ছড়িয়ে দিন বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন এখনই!
🔗 বিস্তারিত পড়ুন: www.businesstoday24.com