হেলথ ডেস্ক:
ইংল্যান্ডের কিছু অঞ্চলে প্রতি ১ হাজার মানুষের মধ্যে একজনের দেহে যৌনবাহিত সংক্রমণ সিফিলিস শনাক্ত হয়েছে, যা গত ৭৬ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য সুরক্ষা সংস্থা (ইউকেএইচএসএ)।
বিশেষত দক্ষিণ লন্ডনের ল্যাম্বেথ এলাকায় পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ। ২০২৪ সালে এখানে প্রতি ১ লাখ মানুষের মধ্যে প্রায় ১৩৮ জন সিফিলিসে আক্রান্ত হয়েছেন, যা গড়ে প্রতি ১ হাজারে একজনেরও বেশি।
সিফিলিস কী?
সিফিলিস একটি বিপজ্জনক ব্যাকটেরিয়াজনিত যৌনবাহিত রোগ (এসটিআই), যা Treponema pallidum নামক ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয়ে থাকে। এটি মূলত যৌনসম্পর্কের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়, তবে গর্ভবতী মায়ের শরীর থেকে নবজাতকের মধ্যেও সংক্রমণ ঘটতে পারে। সিফিলিস শরীরে বিভিন্ন পর্যায়ে বিকাশ করে—প্রাথমিক, মাধ্যমিক, সুপ্ত এবং চূড়ান্ত পর্যায়। প্রাথমিক পর্যায়ে গোপনাঙ্গ, মুখ বা শরীরের অন্য অংশে ব্যথাহীন ক্ষত দেখা দেয়। পরবর্তী পর্যায়ে ত্বকে র্যাশ, জ্বর, গলা ব্যথা, লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়া ইত্যাদি উপসর্গ দেখা যায়।
যদি সঠিকভাবে চিকিৎসা না করা হয়, সিফিলিস মস্তিষ্ক, স্নায়ুতন্ত্র, হৃদযন্ত্রসহ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গে মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে, এমনকি মৃত্যুও ঘটতে পারে। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে এটি অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে সম্পূর্ণভাবে নিরাময়যোগ্য।
যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে দেশে ৯ হাজার ৫৩৫টি সিফিলিস সংক্রমণের ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। যা আগের বছরের তুলনায় ১ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। এই পরিসংখ্যান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে সর্বোচ্চ।
এদিকে সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী গনোরিয়া বা ‘সুপার গনোরিয়া’ সংক্রমণের ঝুঁকিও আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। যদিও গনোরিয়ার সামগ্রিক সংক্রমণের হার ২০২৩ সালের ৮৫ হাজার ৩৭০ থেকে ২০২৪ সালে কমে ৭১ হাজার ৮০২-এ দাঁড়িয়েছে (প্রায় ১৬ শতাংশ হ্রাস), তবে এর মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী স্ট্রেইনের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিরাপদ যৌনাচার, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সময়মতো পরীক্ষা-নিরীক্ষাই এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি মোকাবেলার প্রধান উপায়।










