বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, বাগেরহাট: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ ও অমাবস্যার প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দুপুর থেকে ভয়াবহভাবে প্লাবিত হয়েছে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। স্বাভাবিকের তুলনায় পাঁচ থেকে ছয় ফুট উচ্চতার এই জলোচ্ছ্বাস শুধু বন বিভাগের স্থাপনাই নয়, হুমকির মুখে ফেলেছে বনের বন্যপ্রাণিকেও।
বন বিভাগ জানায়, জলোচ্ছ্বাসে বন বিভাগের বিভিন্ন টহল ফাঁড়ি, অফিস ও ব্যারাক তলিয়ে গেছে। জলমগ্ন হয়েছে কটকা, শেলারচর ও দুবলারচরের বিস্তীর্ণ বনভূমি। এ অবস্থায় বন্যপ্রাণি বিশেষ করে চিত্রা হরিণ চরম বিপদের মুখে পড়ে।
শেলারচর এলাকা থেকে ভেসে যাওয়া অবস্থায় একটি হরিণকে জীবিত উদ্ধার করে আবারও সুন্দরবনে অবমুক্ত করা হয়। তবে দুবলারচর থেকে উদ্ধার করা হয় একটি মৃত হরিণের দেহ।
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা রানা দেব বলেন, “বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে অমাবস্যার জোয়ারে পাঁচ থেকে ছয় ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হয়েছে। পুরো সুন্দরবনজুড়ে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে বনাঞ্চলের নিচু এলাকা প্লাবিত হয় এবং বন্যপ্রাণিরা চরম দুর্ভোগে পড়ে।”
কটকা অভয়ারণ্য কেন্দ্রের ফরেস্টার আ. সবুর জানান, “কটকা এলাকায় চার থেকে পাঁচ ফুট পর্যন্ত পানি উঠেছে। অনেক হরিণ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে কটকা ফরেস্ট অফিসের পুকুরপাড়সহ উঁচু জায়গায় আশ্রয় নেয়। তবে এখনো পর্যন্ত ওই এলাকায় কোনো হরিণের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।”
বাগেরহাট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রেজাউল করীম চৌধুরী বলেন, “সুন্দরবন স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় পাঁচ থেকে ছয় ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে দুবলারচর থেকে একটি মৃত হরিণ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এটি জলোচ্ছ্বাসের পানিতে ডুবে মারা গেছে। বনরক্ষীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আরও এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে দেখতে, কোনো বন্যপ্রাণির মৃত্যু হয়েছে কিনা।”
সুন্দরবনের মতো সংবেদনশীল অঞ্চল প্রতি বছর এমন দুর্যোগের মুখে পড়ে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এর মাত্রা বাড়ছে। তীব্র লঘুচাপ, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং অতিরিক্ত জোয়ার বনের জীববৈচিত্র্য ও বাস্তুতন্ত্রের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরণের দুর্যোগ মোকাবেলায় সময়োপযোগী পূর্বপ্রস্তুতি, উন্নত নজরদারি এবং বন্যপ্রাণির জন্য বিকল্প নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থাই হতে পারে একমাত্র সমাধান।
মেটা বিবরণ:
সুন্দরবনে অমাবস্যার প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। উদ্ধার হয়েছে একটি মৃত ও একটি জীবিত হরিণ। বন বিভাগের উদ্বেগ বাড়ছে বন্যপ্রাণি নিয়ে।
বিকল্প শিরোনাম (৫টি):
-
বঙ্গোপসাগরের জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত সুন্দরবন, মৃত হরিণ উদ্ধার
-
অমাবস্যার জোয়ারে তলিয়ে গেল সুন্দরবন, বিপন্ন বন্যপ্রাণি
-
লঘুচাপের জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গেল হরিণ, মৃতদেহ মিলল দুবলারচরে
-
সুন্দরবনে ৬ ফুট জলোচ্ছ্বাস, বন বিভাগের ফাঁড়ি ও বন্যপ্রাণি হুমকিতে
-
কটকায় আশ্রয় নেয় হরিণ, দুবলারচরে মিলল মৃতদেহ: জোয়ারে বিপর্যস্ত সুন্দরবন










