Home স্বাস্থ্য কোন খাবারগুলো আপনার হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়?

কোন খাবারগুলো আপনার হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়?

হেলথ ডেস্ক: বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর প্রধান কারণের মধ্যে হৃদরোগ অন্যতম। অতিরিক্ত ওজন, ধূমপান, অনিয়মিত জীবনযাপন ও অতিরিক্ত মদ্যপান হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তবে সুষম ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস হৃদরোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, কিছু নির্দিষ্ট উদ্ভিজ্জ উপাদান হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখতে বিশেষভাবে কার্যকর।
ফ্ল্যাভান-৩-অলস ও হৃদস্বাস্থ্য

অ্যাপেল, আঙ্গুর, চা ও ডার্ক চকলেটে রয়েছে ফ্ল্যাভান-৩-অলস নামের এক ধরনের উদ্ভিজ্জ যৌগ, যা রক্তচাপ কমাতে ও রক্তনালির গঠন মজবুত রাখতে সাহায্য করে। যুক্তরাজ্যের সারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বলছে, উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তদের মধ্যে এই যৌগ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর। অপরদিকে, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা মতে, ফাইটোস্টেরল নামের আরেকটি উদ্ভিজ্জ যৌগ হৃদরোগ ও টাইপ-টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।

কোন কোন খাবার হৃদয়বান্ধব

আপেল: ছোট একটি আপেলে থাকে প্রায় ১৫ মিলিগ্রাম ফ্ল্যাভান-৩-অলস এবং কোয়ারসেটিন নামের উপাদান, যা প্রদাহ হ্রাস করে ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। আপেলের ত্বক ও মাঝখানের অংশে সবচেয়ে বেশি উপকারী উপাদান থাকে। দিনে একটি আপেল খাওয়া যথেষ্ট।

আঙ্গুর: গ্রীষ্মে টাটকা আঙ্গুর হৃদয়ের জন্য উপকারী। প্রতি ৮০ গ্রাম আঙ্গুরে প্রায় ৬ মিলিগ্রাম ফ্ল্যাভান-৩-অলস থাকে। তবে শুকনো কিশমিশে চিনির মাত্রা বেশি থাকায় তা কম খাওয়াই ভালো।

ওটস: ওটসে থাকে বিটা-গ্লুকান নামের দ্রবণীয় আঁশ, যা ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমায়। এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। প্রতিদিন সকালের নাস্তায় ওটস রাখা যেতে পারে।

অলিভ তেল: ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্যতালিকায় অলিভ তেল গুরুত্বপূর্ণ। এতে থাকা ওলেইক অ্যাসিড রক্তে চর্বির ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। রান্নার শেষে স্যালাড বা পাস্তার উপর দিয়ে অলিভ তেল ছিটিয়ে খাওয়া ভালো।

বাদাম (বিশেষ করে কাজু ও বাদাম): বাদামে থাকে ভালো চর্বি, আঁশ ও লিনোলেইক অ্যাসিড, যা কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০ গ্রাম (এক মুঠো) অনুনমোদিত মাত্রা।

স্যালমন মাছ: এতে থাকে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, যা রক্তের ট্রাইগ্লিসারাইড কমায়। সপ্তাহে অন্তত একবার স্যালমন বা অন্য তেলযুক্ত মাছ খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

চা: এক কাপ চায়ে প্রায় ২৮০ মিলিগ্রাম ফ্ল্যাভান-৩-অলস থাকে। কালো কিংবা সবুজ, যে কোনো চা হৃদয়ের জন্য উপকারী, তবে চিনি ছাড়া পান করাই উত্তম।

ডার্ক চকলেট: কমপক্ষে ৭০ শতাংশ কোকোযুক্ত ডার্ক চকলেটে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পলিফেনল। সপ্তাহে এক-দুবার তিন টুকরো খাওয়া নিরাপদ, তবে চিনি ও প্রক্রিয়াজাতকরণের মাত্রা বিবেচনায় রাখা জরুরি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু নির্দিষ্ট কিছু খাবার খেয়েই হৃদরোগ রোধ করা যাবে না। বরং ফলমূল, শাকসবজি, দানা শস্য, মাছ, বাদাম ও স্বাস্থ্যকর তেলসমৃদ্ধ বৈচিত্র্যময় উদ্ভিজ্জ খাদ্যাভ্যাসই দীর্ঘমেয়াদে হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখতে পারে।