আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
শনিবার সকালে মাত্র একটি কাজেই বেরিয়েছিলেন তিনি, গরুর জন্য কিছু খাবার আনবেন। বাড়ির লোক ভেবেছিল, আধা ঘণ্টার মধ্যেই ফিরবেন। কিন্তু আর ফেরা হয়নি সায়রার। ফিরে এসেছেন একেবারে নিথর, রক্তাক্ত হয়ে, ধানের খেতে লুটিয়ে।
রবিবার সকালে ভারতের উত্তর প্রদেশের মোরাদাবাদ জেলার কোতোয়ালি মৈনাথের মাঠে পাওয়া যায় ২২ বছরের যুবতী সায়রার নিথর দেহ। গলা ও পেটের চারপাশে ছিল একাধিক ছুরিকাঘাতের ক্ষত। শরীরের গোপনাঙ্গে ছিল রক্তক্ষরণ। যন্ত্রণায় কাতর শরীরে শেষ নিঃশ্বাসটুকু ফেলার আগেও তিনি জীবন ভিক্ষা করেছিলেন। কিন্তু দানবতা থেমে থাকেনি।
প্রথমে সন্দেহ হয়েছিল, তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে। কিন্তু ময়নাতদন্তে জানা যায়, ধর্ষণ নয় তাঁকে ঠান্ডা মাথায় স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে ১৮ বার আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, সায়রাকে হত্যা করার আগে স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে তাঁর গোপনাঙ্গ পর্যন্ত বিদ্ধ করা হয়।
তদন্তে নেমে পুলিশ সায়রার ফোন থেকে পাঁচটি মিসড কল শনাক্ত করে। নম্বরটি রাফি নামের এক যুবকের। সায়রার গ্রামেরই বাসিন্দা সে। সায়রার মা সাফিনা জানান, রাফি প্রায়ই তাঁর মেয়েকে বিরক্ত করত, প্রেমের নামে হেনস্থা করত।
পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হলে রাফি স্বীকার করে, সায়রাকে তিনিই হত্যা করেছেন। রাফি জানায়, “আমি ওকে ভালোবাসতাম, কিন্তু সে কখনও ভালোবাসা ফেরত দেয়নি। সম্প্রতি গ্রামের একজন ব্যক্তি সায়রাকে নিয়ে কটু কথা বলে ও মারধর করে আমাকে। আমি ধরে নিই, তাদের মধ্যে সম্পর্ক আছে।”
এরপরই শুরু হয় সায়রার প্রতি নজরদারি। শনিবার মাঠের পথে একা পেয়ে পিছু নেয় রাফি। এক ফাঁকে স্ক্রু ড্রাইভার বার করে পরপর ১৮ বার আঘাত করে। সায়রা যখন যন্ত্রণায় চিৎকার করে কেঁদে কেঁদে বলছিলেন, “আমাকে বাঁচাও”, তখন রাফি আরও এক ধাপ এগিয়ে তাঁর গোপনাঙ্গে আঘাত করে। এরপর শরীর ঝাঁকিয়ে দেখে নিশ্চিত হয়, তিনি মারা গেছেন।
সেই রাতে বাড়ি ফিরে রাফি স্নান করে, জামাকাপড় বদলায়, ঘুমিয়ে পড়ে। যেন কিছুই হয়নি।
পুলিশ এখন রাফিকে গ্রেপ্তার করেছে। চলেছে তদন্ত। তবে প্রশ্ন জাগে একটা মেয়ের না বলা মানেই কি তার জীবন শেষ হয়ে যাবে? ভালোবাসার নামে এই ভয়ঙ্কর সহিংসতা আর কতদিন?
👉 শেয়ার করুন, সচেতনতা ছড়ান, সায়রার জন্য ন্যায়বিচার দাবি করুন।
👉 লাইক দিয়ে পাশে থাকুন আমাদের।