Home First Lead চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি, সেনা মোতায়েন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি, সেনা মোতায়েন

ছবিধ: সংগৃহীত
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষের পর টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে রবিবার (৩১ আগস্ট) দুপুর ২টা থেকে সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন।

হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন প্রজ্ঞাপন জারি করে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট বাজারের পূর্বসীমা থেকে পূর্বদিকের রেলগেট পর্যন্ত এলাকায় এ আদেশ কার্যকর থাকবে। এ সময়ে কোনো সভা-সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল, গণজমায়েত, বিস্ফোরক দ্রব্য, আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র বহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির একত্রে চলাফেরাও সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

ছবি: সংগৃহীত

বিকেল পৌনে ৪টার দিকে ঘটনাস্থলে পুলিশ, র‌্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন হয়ে যৌথভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জনসাধারণের জীবন-সম্পদ রক্ষা ও শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতেই এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

শনিবার (৩০ আগস্ট) রাত সোয়া ১২টা থেকে রোববার দুপুর পর্যন্ত শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে একাধিক দফায় সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন, প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফসহ অন্তত শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে অন্তত ২০ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, তাদের পক্ষ থেকেও অন্তত ১০ থেকে ১২ জন আহত হয়েছেন।

রোববার সকালে নতুন করে সংঘর্ষ বাঁধলে স্থানীয়দের ধাওয়ায় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক কামাল উদ্দিন অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে শিক্ষার্থীরা প্রধান ফটক বন্ধ করে জিরো পয়েন্ট এলাকায় বিক্ষোভ শুরু করে হামলাকারীদের বিচারের দাবি তোলে।

এই সংঘর্ষের সূত্রপাত শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে চবি দুই নম্বর গেট এলাকার শাহাবুদ্দীন ভবনে ঘটে। দর্শন বিভাগের প্রথম বর্ষের এক নারী শিক্ষার্থী বাসায় ফিরতে চাইলে দারোয়ান গেট খুলতে অস্বীকৃতি জানান। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর রুমমেটদের সহযোগিতায় গেট খোলা হলেও দারোয়ান ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে হাতাহাতি করে তাকে মারধর করেন।

ছবি: সংগৃহীত

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন,
“আমি রাত ১১টা ২০ মিনিটে ফিরি। নিয়ম অনুযায়ী রাত ১২টা পর্যন্ত বাসায় ঢোকা যায়। কিন্তু দারোয়ান গেট খোলেননি। রুমমেটরা বাধ্য করলে গেট খুললেও তিনি আমার ওপর চড়াও হন, গায়ে হাত তোলেন, ঘাড়ে চড় মারেন।”

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা রাতেই হল থেকে বেরিয়ে এসে দুই নম্বর গেট এলাকায় জড়ো হন। পরে স্থানীয়রাও লাঠিসোঁটা নিয়ে সেখানে উপস্থিত হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, যা দফায় দফায় সংঘর্ষে রূপ নেয়।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে। এর মধ্যে পরিস্থিতি বিবেচনায় চবির উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক কামাল উদ্দিন রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেন। তবে ক্লাস ও শাটল ট্রেন পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী চলবে।