Home কৃষি  খানসামায় থাই  পেয়ারা  চাষে সফল ইফতি

 খানসামায় থাই  পেয়ারা  চাষে সফল ইফতি

মো. আজিজার রহমান:
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় থাই থ্রি পেয়ারা চাষে হিসেবে  সফল উদ্যোক্তা মো. ইখতিয়ার উদ্দিন  ইফতি। উপজেলার ভাবকী ইউনিয়নের কুমড়িয়া গ্রামে ১০ একর জমিতে গড়ে তুলেছেন মিষ্টি ও সুস্বাদু থাই থ্রি পেয়ারা,মাল্টা ও কমলার বাগান।
জানা যায়, ছাত্রজীবন থেকে কৃষির সাথে সম্পৃক্ত মো. ইখতিয়ার উদ্দিন  ইফতি। পড়াশুনার পাশাপাশি কিশোর থেকেই তিনি বিভিন্ন ধরনের ফলের চাষ করেন। প্রায় ৪ বছর আগে অন্যের কিছু জমি ইজারা নিয়ে বন্ধুদের সাথে শেয়ারে থাই থ্রি পেয়ারার চাষ শুরু করলেও সে সময়ে তিনি কঠিন লোকসানের মুখে পড়ে।  তবু হাল ছাড়েনি মো. ইখতিয়ার উদ্দিন  ইফতি। পরবর্তীতে প্রায় আবারও নিজেই অন্যের ১০ একর জমি ইজারা নিয়ে থাই থ্রি পেয়ারার চাষ শুরু করেন। বর্তমানে থাই থ্রি পেয়ারা লাভজনক হওয়ায় জমির পরিমাণ বাড়তে থাকেন। বর্তমানে  তিনি ১০ একর জমির উপর পাঁচটি বাগান গড়ে তুলেছেন। প্রথম দিকে জমি ইজারা টাকার পরিমাণ কম থাকলেও বর্তমানে প্রতিবছর ২০ হাজার টাকা বিঘা হিসেবে ইজারা নেয়া হয়েছে।
সফল উদ্যোক্তা মো. ইখতিয়ার উদ্দিন  ইফতি বলেন, আমি ছাত্র জীবন থেকেই কৃষিতে সম্পৃক্ত। নিজের তেমন জমিজমা নাই। তাই অন্যের জমি ইজারা নিয়ে থাই থ্রি পেয়ারা,মাল্টা ও কমলার চাষাবাদ করছি। ২০০৮-২০০৯ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দিনাজপুর সরকারি কলেজ থেকে ব্যবস্থানা বিষয়ে অনার্স-মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। এরপর হেলথকেয়ার ফার্মাসিটিকেল বেশ কিছু দিনে কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীতে চাকরি ছেড়ে দিয়ে বর্তমানে কৃষি নির্ভর হয়ে ওঠেন এই সফল উদ্যোক্তা  মো. ইখতিয়ার উদ্দিন  ইফতি। তিনি আরো বলেন, আলহামদুলিল্লাহ..এখন আমি একজন সফল উদ্যোক্তা। আর এ কাজে আমাকে সার্বিক সহযোগীতা করছেন আমার বাবা মো. ইয়াকুব আলী।
 থাই থ্রি পেয়ারার চারা নাটোর জেলা থেকে সংগ্রহ করে করি সে সময় প্রতিটি চারা খরচ পড়েছিল ৩০-৪০ টাকা।প্রথম বছর প্রতি বিঘাতে খরচ পড়ে প্রায় ৫০-৬০ হাজার টাকা। গাছ বড় হওয়ার সাথে সাথে খরচ কিছুটা বৃদ্ধি পায়। চারা লাগানোর ৬ মাস পর থেকে গাছে পেয়ারা আসা শুরু করে। গাছে যখন পেয়ারা আসা শুরু করে তখন অল্প পরিমাণ উঠে। এসব পেয়ারা পাইকাররা এসে জমি থেকে সরাসরি নিয়ে যান। দিনাজপুরসহ কয়েকটি জেলায় এগুলো সরবরাহ করা হয়। মো. ইখতিয়ার উদ্দিন  ইফতি জানান, বাগানেগুলোতে প্রতিদিন প্রায় ১৩-১৫ জন শ্রমিক কাজ করে।
বাগানে কাজ করা নিয়মিত শ্রমিক আবু তালেব,হামীম ও মোরশেদুলসহ কয়েকজন বলেন, গত তিন বছর থেকে তারা বাগানে নিয়মিত ১৩-১৫ জন কাজ করছেন। প্রতিদিন কাজ করছি। এই পেয়ারা বাগানে গড়ে উঠার ফলে আমরা এখানে সারাবছরই কাজ করতে পারি। বাগানের ঘাস নিড়ানো থেকে শুরু করে পানি,সার ও সেচ দেয়াসহ বিভিন্ন পরিচর্চা ও বাগান থেকে পেয়ারা উঠিয়ে প্যাকেটজাত করি আমরাই।
এ ব্যাপারে খানসামা উপজেলা কৃষি অফিসার বাসুদেব রায় বলেন, কাচীনিয়ার পেয়ারা চাষী মো. ইখতিয়ার উদ্দিন  ইফতি পেয়ারা বাগানটি পরিদর্শন করা হয়েছে। তিনি সেদিক দিয়ে বেশ সফল ও ভালো উদ্যোক্তা। বিভিন্ন সময়ে তিনি পরামর্শ নিয়ে থাকেন। কৃষি অফিস থেকে আমরা কারিগরি সহযোগিতা করছি।
এ বিষয়ে ৫নং ভাবকী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল আলম তুহিন বলেন, নিশ্চিত মো. ইখতিয়ার উদ্দিন  ইফতি একজন সফল উদ্যোক্তা ও পেয়ারা চাষী। ওনার বানানে এলাকার কিছু মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে এবং নিয়ম ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হচ্ছে।