Home চট্টগ্রাম বারো আউলিয়ার পুণ্যভূমি চট্টগ্রামে জুমার আমেজ: ইবাদত ও ঐতিহ্যের মেলবন্ধন

বারো আউলিয়ার পুণ্যভূমি চট্টগ্রামে জুমার আমেজ: ইবাদত ও ঐতিহ্যের মেলবন্ধন

“জুমার দিন হলো গরিবের হজ্জ। চট্টগ্রামের মাটি ও মানুষের সাথে ইসলামের যে গভীর সম্পর্ক, তা প্রতি জুমায় নতুন করে ফুটে ওঠে।” — স্থানীয় একজন ধর্মপ্রাণ মুসল্লি।

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: শীতের সকালের হালকা কুয়াশা ভেদ করে আজ চট্টগ্রামের আকাশ-বাতাস মুখরিত হচ্ছে ‘জুমাতুল মুবারক’-এর ধ্বনিতে। আজ শুক্রবার, সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন। বন্দরনগরীর অলিগলি থেকে শুরু করে রাজপথ, সবখানেই চোখে পড়ছে সাদা পাঞ্জাবি আর টুপি পরা মুসল্লিদের ব্যস্ততা।

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যের প্রতীক আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদে আজ সকাল থেকেই মুসল্লিদের ঢল নেমেছে। মোগল স্থাপত্যের এই সাক্ষী কেবল একটি মসজিদ নয়, চট্টগ্রামের মানুষের আস্থার কেন্দ্রবিন্দু। এছাড়া বায়তুশ শরফ, জমিয়তুল ফালাহ এবং চন্দনপুরা মসজিদের মিনারগুলো থেকে ভেসে আসা আজানের সুর শহরজুড়ে এক আধ্যাত্মিক প্রশান্তি ছড়িয়ে দিচ্ছে।

চট্টগ্রামের জুমার দিনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো মাজার জিয়ারত। জুমার নামাজের আগে ও পরে হযরত শাহ আমানত (রহ.) এবং বায়োজিদ বোস্তামী (রহ.)-এর দরগাহে হাজারো মানুষের সমাগম ঘটেছে। কেউ আসছেন মানত নিয়ে, কেউবা আসছেন পরিবার আর দেশের জন্য দোয়া করতে। চট্টগ্রামের মানুষের বিশ্বাস ও সংস্কৃতির সাথে মিশে আছে এই আধ্যাত্মিক ধারা।

জুমার নামাজ শেষে চট্টগ্রামের ঘরে ঘরে চলে বিশেষ খাবারের আয়োজন। যদিও এখন সেই আগের মতো বড় মেজবান সব জায়গায় হয় না, তবুও জুমার দিন মানেই চাটগাঁইয়া পরিবারগুলোতে নলা কাঞ্জি, গরুর মাংস আর গরম ভাতের এক ঘরোয়া উৎসব। পাড়া-প্রতিবেশীদের সাথে কুশল বিনিময় আর মেজবানি আপ্যায়নের এই সংস্কৃতি এখনো অটুট।

নগরীর এক জামে মসজিদের খতিব মওলানা মোহাম্মদ কাউসার জানালেন, আজকের খুতবায়  ইসলামের ভ্রাতৃত্ববোধ, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ওপর গুরুত্বারোপ করবেন। বিশেষ করে শীতকালীন সময়ে আর্তমানবতার সেবায় এগিয়ে আসার জন্য মুসল্লিদের আহ্বান জানাবেন।

জুমার এই পবিত্রতা বজায় থাকুক সারা সপ্তাহ জুড়ে। বন্দরনগরীর প্রতিটি ঘরে বয়ে আনুক শান্তি আর বরকত।