বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম:বহুল প্রত্যাশিত বঙ্গবন্ধু টানেলের উদ্বোধন হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দেশের যোগাযোগব্যবস্থা নবদিগন্ত উন্মোচিত হলো। শনিবার সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীর পশ্চিম তীরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ টানেলের উদ্বোধন করেন। টানেলটি আগামীকাল সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী পতেঙ্গায় উদ্বোধনস্থলে পৌঁছালে মন্ত্রিপরিষদের কয়েকজন সদস্য, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী এবং আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা স্বাগত জানান। এসময় সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক আয়োজন উপভোগ করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর টানেলের উদ্বোধন করে মোনাজাতে অংশ নেন।
টানেল উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মণি, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী এবং মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
টানেল উদ্বোধন উপলক্ষে এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘চট্টগ্রামবাসীর বহুল প্রতীক্ষিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল নির্মাণের ফলে বন্দর নগরী চট্টগ্রাম ‘ওয়ান সিটি টু টাউনস’ মডেলে দৃশ্যমান হবে। এই টানেল দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্কে সংযুক্তি, চট্টগ্রাম শহরের যানজট হ্রাস, আনোয়ারা প্রান্তে বিদ্যমান ও গড়ে উঠা শিল্পাঞ্চল এবং পর্যটন শিল্পের বিকাশসহ চট্টগ্রাম বন্দর ও প্রস্তাবিত মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরে পণ্য পরিবহনে যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করবে। টানেলটি চালু হলে বাংলাদেশের জিডিপি প্রায় শূন্য দশমিক ১৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।’
উদ্বোধনী ফলক উন্মোচনের পর পরই আতশবাজি ফোটানো হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন।এরপর গাড়িতে চড়ে টানেল ধরে রওনা হন আনোয়ারা প্রান্তে। সেখানে নদীর তীরে আরেকটি ফলক উন্মোচন করেন।আগামীকাল রোববার (২৯ অক্টোবর) থেকে টানেল দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হবে।
দক্ষিণ এশিয়ায় নদীর তলদেশে প্রথম সুড়ঙ্গপথ এই টানেল। এটি চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা থেকে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে আনোয়ারা উপজেলাকে যুক্ত করেছে। ফলে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে সাগর উপকূল ঘিরে শিল্পের নতুন দুয়ার খুলে যাচ্ছে।
টানেল উদ্বোধন শেষে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা আনোয়ারার জনসভায় যোগ দিতে টানেলের ভেতর দিয়ে পাড়ি দিয়েছেন।
জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সরকারপ্রধান। জনসভায় আনোয়ারা, কর্ণফুলী, পটিয়া, বাঁশখালীসহ উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগরের বিভিন্ন স্থান থেকে নেতাকর্মীরা অংশ নিয়েছেন।
১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই প্রকল্পের প্রায় অর্ধেক চীনের এক্সিম ব্যাংক অর্থায়ন করেছে। টানেলের পুরো রুটের দৈর্ঘ্য হলো ৯.৩৯ কিলোমিটার (৫.৮৩ মাইল), সুড়ঙ্গটির দৈর্ঘ্য ৩.৩২ কিলোমিটার (২.০৬ মাইল) ও এর ব্যাস ১০.৮০ মিটার (৩৫.৪ ফুট)। এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের নেটওয়ার্ক উন্নত হবে। চীনের কোম্পানি চায়না কমিউনিকেশনস কনস্ট্রাকশন কোম্পানি এটি নির্মাণ করেছে।