বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসন শেষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরা উপলক্ষে রাজধানীর কুড়িল সংলগ্ন ৩০০ ফিট (পূর্বাচল রোড) এলাকা এখন এক বিশাল জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের ঢলে এই বিস্তীর্ণ এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়েছে।
নিরাপত্তা তদারকি করছেন এমন একজন সিনিয়র নেতা জানালেন, আমাদের লক্ষাধিক কর্মী মাঠে আছে। পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে আমরা সার্বক্ষণিক সমন্বয় করছি। মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে আসছে, তাই আমরা চেষ্টা করছি যেন কোনো বিশৃঙ্খলা না হয় এবং সাধারণ মানুষের যাতায়াতেও যেন খুব বেশি ভোগান্তি না হয়। এটি হবে একটি ঐতিহাসিক ও শান্তিপূর্ণ গণসংবর্ধনা।
যিনি পঞ্চগড় থেকে আসা একজন তৃণমূল কর্মি আবদুর রহমান বলেন, ভাই, ভিড় বইলা ভুল করবেন না, এটা একটা সমুদ্র! আমি তো পা ফেলার জায়গা পাচ্ছি না। দীর্ঘ ১৭ বছর পর আমাগো নেতা ফিরতেছে, এই আনন্দ ভাষায় বোঝানো যাবে না। কষ্ট করে আসছি ঠিকই, কিন্তু মানুষের এই ঢল দেইখা সব ক্লান্তি দূর হয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় তারেক রহমানের ঢাকা পৌঁছানোর কথা থাকলেও, ভোররাত থেকেই নেতাকর্মীরা সম্মেলনস্থলে জড়ো হতে থাকেন। কুড়িল বিশ্বরোড থেকে শুরু করে পূর্বাচল অভিমুখী ৩০০ ফিট সড়কের দুই পাশ এখন কানায় কানায় পূর্ণ। হাতে জাতীয় পতাকা, দলীয় প্রতীক ধানের শীষ এবং তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন সমর্থকরা।
কেবল ঢাকা নয়, বিশেষ ট্রেনে করে কক্সবাজার, পঞ্চগড়, খুলনা ও রাজশাহীসহ দেশের ১০টি রুট থেকে হাজার হাজার মানুষ যোগ দিয়েছেন এই সমাবেশে। কুড়িল এলাকায় আসা পাবনার এক বিএনপি কর্মী বলেন, “আমরা গত রাতে রওনা দিয়েছি। আমাদের নেতার ১৭ বছরের সংগ্রাম আজ সফল হতে যাচ্ছে। এই দৃশ্য দেখার জন্যই আমাদের আসা।”
বিশাল এই জনসমাগম সামাল দিতে এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন ও দলীয় ভলান্টিয়াররা। সড়কের মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। পুলিশের পাশাপাশি বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন। অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি সেবার জন্য রাখা হয়েছে বিশেষ ‘ইমার্জেন্সি লেন’।
পুরো ৩০০ ফিট এলাকাকে সাজানো হয়েছে নববধূর সাজে। তোরণ, ফেস্টুন আর রঙিন পতাকায় ছেয়ে গেছে চারপাশ। মোড়ে মোড়ে বাজছে দেশাত্মবোধক গান ও দলীয় সংগীত। আগত নেতাকর্মীদের পানির বোতল, শুকনো খাবার এবং স্যালাইন সরবরাহ করছেন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা।
বিএনপির শীর্ষ নেতারা বলছেন, ঢাকার ইতিহাসে এটি হবে অন্যতম বৃহত্তম গণজমায়েত। তাদের মতে, তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তন কেবল একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, বরং সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ের এক নতুন সংগ্রামের সূচনা।










